বান্দরবানে অজ্ঞাত রোগে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু

মাথাভাঙ্গা অনলাইন: বান্দরবানে অজ্ঞাত রোগে শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ইতিমধ্যে রোগটি কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে। পাহাড়ে বিশুদ্ধ পানির সংকটে খালের দূষিত পানি ব্যবহারে এ পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। সোমবার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা রয়েছে। মৃতরা হলেন- সাংকিংপাড়ার বাসিন্দা বয়োজ্যেষ্ঠ নাংলং খুমি (৭০), অংথংপাড়ার খুবে অং (৮০) এবং লংথাংপাড়ার তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ডালুং খুমি (১০)।

স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয়রা জানান, জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছা ইউনিয়নের বেতছড়া এলাকার লংথাংপাড়া এবং সাংকিংপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি পাহাড়ি গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি এবং আমাশার দেখা দেয়। ইতিমধ্যে পাড়াগুলোতে আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। অজ্ঞাত এ রোগে পাহাড়ি পাড়াগুলোতে আক্রান্ত হয়েছেন আরও অনেকেই।

বোমাং সার্কেলের লাংথাংপাড়ার কারবারি (গ্রামপ্রধান) থেউলাং খুমি জানান, বেতছড়া ইউনিয়নে খুমি জনগোষ্ঠীর তিনটি পাড়ায় হঠাৎ করে পেটব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, আমাশয় রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে তিনজন মারা গেছেন।

সাংকিপাড়ার বাসিন্দা লংরেন খুমি বলেন, তার পাড়ায় আরও ৫ জন আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের দূরের একটি বাজার থেকে ওষুধ কিনে এনে দেয়া হয়েছে।

বিষয়টি স্বীকার করে রোয়াংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মংহ্লা প্রু মারমা বলেন, এরা মূলত দূষিত পানি খাওয়া এবং ব্যবহারের ফলে টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

বছরে এই সময় এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয় পাহাড়ে। ওই এলাকায় বেতছড়া বাজারে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। আক্রান্তরা চাইলে সেখান থেকে ওষুধ নিতে পারেন। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী রয়েছেন। আজ সোমবার স্বাস্থ্য ক্লিনিক থেকে প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়া এলাকায় দুজন স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হবে। তা ছাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উথোয়াই মারমা বলেন, আমায় ঘটনাটি কেউই জানায়নি। নিজ নিজ এলাকায় ইউনিয়নের মেম্বারদের পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে বান্দরবানের সিভিল সার্জন ডা. অংসুই প্রু মারমা বলেন, পানিবাহিত রোগে বেতছড়ায় কয়েকজনের মৃত্যুর খবর শুনেছি। রোগের প্রকোপ বেড়েছে পাড়াগুলোতে।

স্বাস্থ্য বিভাগের মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর রোগের আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর দেখে বলা যাবে রোগটি কী। প্রাথমিকভাবে পানিবাহিত রোগ মনে হচ্ছে। এর আগে লামা উপজেলায় সরই ইউনিয়নে হামে আক্রান্ত হয়ে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকজন শিশুকের গ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে লামা হাসপাতালে এনে চিকিৎসাও দেয়া হয়।

 

Comments (0)
Add Comment