বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহেশপুরে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা

মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে উপজেলা ডাকবাংলো মিলনায়তনে মহেশপুর সর্বস্তরের ছাত্রসমাজের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপজেলাব্যাপী প্রভাব বিস্তারসহ নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের বাইরে রেখে কমিটি দেয়া হয়। সংগঠনের জেলা কমিটির নেতারা এই কমিটি দেন। এর প্রতিবাদে আহ্বায়ক কমিটি অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হলো। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদ হাসান, জেলা জুলাই যোদ্ধা কমিটির মুখ্য সংগঠক মেহেদী হাসান বাপ্পী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী মামুনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। গত ২৬ জুন ৩২৯ সদস্যবিশিষ্ট মহেশপুর উপজেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে সংগঠনের নেতৃত্ব কেনাবেচার অপচেষ্টা চলছে। সংগঠন কোনো ব্যক্তির ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নয়। আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে জেলা কমিটি নিজেদের ইচ্ছামতো মহেশপুর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেছে। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন বলেন, গত ১৮ জুলাই থেকে মহেশপুর উপজেলায় তীব্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যেখানে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেয়। অনেকেই রাবার বুলেট, টিয়ারগ্যাসসহ পুলিশের হামলায় আহত হয়েছেন। কিন্তু উপজেলা আহ্বায়ক কমিটিতে আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের কেউ স্থান পাননি। যারা আন্দোলনে ছিলেন না, আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী কোনো কাজে যাননি, তাঁদের মতো মানুষকে কমিটিতে রাখা হয়েছে, আহ্বায়ক করা হয়েছে। বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটির নেতারা উপজেলায় সিন্ডিকেট করে টাকাপয়সা কামিয়ে এমন কমিটি ঘোষণা করেন। যাঁকে আহ্বায়ক করা হয়েছে, তাঁর বাবা ছিলেন কৃষক লীগ নেতা। আর্থিক স্বার্থ ছাড়া এমন কমিটি হতে পারে না। আমাদের দাবি, এই কমিটি বাতিল করে তদন্তপূর্বক যোগ্যদের নিয়ে কমিটি করা হোক। জেলা কমিটি এই দায়িত্ব তদন্ত করবে। তারা যদি না পারে, তাহলে কেন্দ্রীয় কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হোক।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মহেশপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক হামিদুর রহমান রানা বলেন, ‘আমার বাবা অন্য দলের সাধারণ একজন সমর্থক ছিলেন। বাবা একদল সমর্থন করলে সন্তান তাঁর নিজের মতের স্বাধীনতা প্রকাশ করতে পারবেন না—এটা কখনোই হয় না। প্রতিটি মানুষেরই ব্যক্তিস্বাধীনতা প্রকাশের অধিকার রয়েছে। আমি জুলাই আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছি। মূলত ভবিষ্যতে পৌরসভা ও ইউনিয়ন কমিটি গঠন করা হবে। যে কারণে অনেককেই আহ্বায়ক কমিটিতে রাখা হয়নি।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঝিনাইদহ জেলা কমিটির আহ্বায়ক আবু হুরাইরা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার কোনো সুযোগ নেই। প্রায় দুই মাস অপেক্ষা করে কমিটি ঘোষণা করেছি। এই কমিটি বাতিল করা সম্ভব নয়। কয়েকজন নিজেদের চাহিদামতো পদ না পেয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।’