রক্ত দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন চুয়াডাঙ্গার কলেজছাত্রী রাবেয়া

রহমান মুকুল: ২৭-২৮ কিলোমিটার দূর থেকে আলমডাঙ্গার হারদী হাসপাতালে ছুটে এসে ক্যান্সার রোগীকে রক্ত দিয়ে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন চুয়াডাঙ্গা মহিলা কলেজের ছাত্রী রাবেয়া মল্লিক। গত ১১ মে তিনি ক্যান্সার আক্রান্ত হারদী গ্রামের এক মাকে রক্ত দান করে সকলের দৃষ্টি কেড়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে অনেকেই রাবেয়া মল্লিককে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল নামে অভিহিত করতে দেখা গেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। জনস্বাস্থ্যফোলেন্স নাইটিঙ্গেল ছিলেন আধুনিক নার্সিং, সমাজ সংস্কারক ও নারী জাগরণের পথিকৃৎ। রাবেয়া মল্লিক সমাজের জন্য কিছু করতে চেয়েছেন। তিনি স্বপ্ন ডেভেলাপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সভাপতি। স্বেচ্ছাসেবী এ সংগঠন এ পর্যন্ত ৬৩০ জনকে রক্তদান করেছে। সংগঠনটিতে প্রায় ৫০ জন সক্রিয় সদস্য নিয়মিত রক্তদান করে থাকেন। মাত্র দু বছর পূর্বে এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির জন্ম। শুরু থেকেই রাবেয়া মল্লিক দক্ষ নেতৃত্ব দিয়ে সফলতার সাথে সংগঠনটি এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। এখন, জেলার অনেকেই এ সংগঠনের নামের সাথে পরিচিত। বিপদে সবচে স্বজনের মতো আপনার করে পাচ্ছেন। অসহায় ও বিপদাপন্ন মানুষের ভরসাস্থল হয়েছে এ সংগঠন। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও সুখ্যাতি রয়েছে প্রকৌশলী আবু হাসান মুন্সির। তিনি জানান, ‘নতুন প্রজন্মের উপর বরাবরই আমার বিশ্বাস রয়েছে। রাবেয়া মল্লিক সমাজসেবায় যে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছেন, তাতে আমার এ বিশ্বাস আরও উচ্চকিত হয়েছে। এত অল্প বয়সে সামাজিক কর্মকান্ডে তিনি যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। এ কারণে তাকে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল বলে অভিহিত করেছি।’
চুয়াডাঙ্গা শহরের কেদারগঞ্জ এলাকার আব্দুল খালেকের কন্যা রাবেয়া মল্লিক। আব্দুল খালেক স’মিলের শ্রমিক। চুয়াডাঙ্গা মহিলা কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী রাবেয়া। ছোটবেলা থেকেই তিনি মানুষের দুঃখ-কষ্ট ও অসহায়ত্বের সাথে পরিচিত। দারিদ্র ও অসুস্থ মানুষের জন্য কিছু করা, তাদের পাশে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছে আজন্ম লালন করেছেন। এখন সে স্বপ্ন বাস্তব করে তুলতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
রাবেয়া মল্লিক বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই সামাজিক ও মানবিক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িত করার স্বপ্ন দেখেছি। সেই স্বপ্ন এখন বাস্তবায়ন করার সংগ্রামে নেমেছি। অসহায় ও পীড়িত মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করে যাচ্ছি। নিজের শহরকে যেভাবে পেয়েছি, তার চেয়ে কিছুটা হলেও মানবিক, সুন্দর ও অধিক বাসযোগ্য করে যেতে চাই।’

 

Comments (0)
Add Comment