শীতের পেঁয়াজ এখন বর্ষার জমিতে : মেহেরপুরের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজে নতুন স্বপ্ন

মেহেরপুর অফিস: যুগ যুগ ধরে পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে শীত মররুমে শুকনো মাটিতে। সেই পেঁয়াজ ক্ষেত ধান আবাদের মতো কাদা তৈরি করে পেঁয়াজ চারা রোপণ করা হচ্ছে। এতে দ্বীধাদ্বন্দ্বে ভুগছিলেন এলাকার বয়োবৃদ্ধ চাষিরা। তবে হাল ছাড়েনি কৃষি বিভাগ ও উদ্যোমী চাষিরা। শেষ পর্যন্ত ফলন এসেছে কাদায় লাগানো সেই পেঁয়াজে। শুধু ফলনই নয় বাম্পার ফলনে প্রতি বিঘায় অর্ধ লাখের ওপরে লাভ করছেন একেকজন চাষি। ভালো দামে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ বিক্রি করে ওই জমিতেই আবার শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ করছেন চাষিরা। পেঁয়াজ আবাদের এই ধারায় দেশের পেঁয়াজ সংকট দূর হবে বলে আশায় বুক বেধেছেন অগ্রগামী এসব কৃষকরা। এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন মেহেরপুর জেলার কয়েকজন গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরসূত্রে জানা গেছে, দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনের ওপর জোর দিয়েছে। সে লক্ষে মেহেরপুর জেলায় এবার ৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ করা হয়। বারি পেঁয়াজ-৫ সহ বিভিন্ন প্রকার জাতের পেঁয়াজ আবাদ করেছিলেন চাষিরা। প্রতি হেক্টরে গড় ১৫-১৬ মে.টন ফলন হয়েছে। ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে ক্ষেত থেকেই বিক্রি হওয়ায় কৃষকরা যেমনি লাভবান হয়েছেন তেমনি এ চাষের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে।
গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষি গাংনী উপজেলার নওপাড়া গ্রামের ফারুক হোসেন বলেন, ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে আমি ৫ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করেছিলাম। যে পরিমাণ ফলন হয়েছে তাতে আমি বিস্মিত। শুধু চাকরির পেছনে না দৌঁড়ে এমন লাভজনক ফসল উৎপাদনের দিকে এগিয়ে আসার জন্য যুব সমাজের প্রতি পরামর্শ দেন উদ্যোগী এই যুবক। তবে সময়মতো এর বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদনে মেহেরপুর জেলা কৃষিতে যুগান্তকারী এক পরিবর্তনের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। এবার লাভ ও ফলনে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে। আগামীতে এ জেলায় আরও বেশি পরিমাণ জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

Comments (0)
Add Comment