নার্সারি করে সফল কার্পাসডাঙ্গার কোমরপুরের ফজলুল হক

ধরে রেখেছেন বৃক্ষমেলায় ১৪ বছর শীর্ষ স্থানটি
শরিফ রতন: গাছের প্রতি ভালোবাসা এবং দেশকে সবুজ করার প্রত্যয়ে ও বেকারত্বের করুণ পরিণতি হতে মুক্ত থাকার জন্য নার্সারি করে সফল হয়েছেন দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের ফজলুল হক। পরিবারের প্রয়োজন ও নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য বেছে নিয়েছিলেন নার্সারিকে। তার বাবার বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলায়। ১৫ বছর আগে ফজলুল হক কোমরপুর চলে আসেন। এসেই জমি লিজ নিয়ে কার্পাসডাঙ্গায় নার্সারি তৈরি করেন, নার্সারির নাম দেন ভাই ভাই নার্সারি। যৌবনের শক্তি ও সাহসকে কাজে লাগিয়ে গুঁটিগুঁটি অব্যাহত পরিশ্রমে নার্সারি করে জীবনের গতি পাল্টিয়ে দিয়েছেন তিনি। এক সময়ের বেকার আজ সফল ব্যক্তি ও সফল উদ্যক্তা ফজলুল হক তার দীর্ঘ ৩০ বছর নার্সারি জীবনের নানা বিষয়ে আলোচনা করেন। ৩০ বছর আগে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য যখন কোনো কাজের দিকে ঝুকছিলেন তখন এক নার্সারি দেখে নার্সারি করার চিন্তা আসে মাথার মধ্যে। জীবননগরে ছোট একটি নার্সারি দেয় তিনি। ওখানে ১৫ বছর নার্সারির ব্যবসা করে আসছিলেন। ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য কার্পাসডাঙ্গায় চলে আসেন। আসার আগেই জেনে ছিলেন কার্পাসডাঙ্গা এলাকায় বড় নার্সারি নেই তাই সুযোগটি তিনি ব্যবহার করেন। কার্পাসডাঙ্গা বাজারের পাশে প্রায় ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গড়ে তোলেন নার্সারি।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থান হতে উন্নত জাতের গাছ সংগ্রহ করি, পরে তা সময়মত বিক্রি করেন। নার্সারিতে আমিসহ আরও দুজন গাছের পরিচর্যা করি। অন্য দুজনকে মাসে ২০ হাজার টাকা বেতন দিয়ে থাকি। মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করি। খরচ বাদে ২০ হাজার টাকা আয় হয় আমার। এখানে এসে বাড়ি করেছি। সন্তানদের বড় করেছি। নার্সারি নিয়ে তিনি তার সংসার সচ্ছলভাবেই পরিচালনা করছেন। চারা বেঁচাকেনার মরসুম আষাঢ় থেকে ৫ মাস পর্যন্ত ভালো বেঁচাকেনা হয়। তবে বর্তমানে আর আগের মতো অবস্থা নেয়, কমেছে গাছ লাগার জায়গা মানুষের বসবাসের বাড়তি জায়গার প্রয়োজনে। এখন মানুষের সচেতনতা বেড়েছে, এর বিকল্প হিসেবে ছাদে বাগান করার প্রচেষ্টা প্রায়ই মানুষের মধ্যে দেখা যায়। একদিকে যেমন বিশুদ্ধ বাতাস ও নির্মল পরিবেশ পাবেন ঠিক পাশাপাশি সেই গাছ হতে প্রাপ্ত ফল আপনাকে প্রশান্তি দেয়ার সাথে কিছু অর্থ ও দিতে পারে। তাই এখন মানুষ দাম দিয়ে ভালো গাছ ক্রয় করে ছাদে বাগান করেন। তার নার্সারিতে রয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ, বনজ, ওষুধি ও ফুলের প্রায় ৩শ’ প্রজাতের চারা। দীর্ঘ ১৪ বছর আমি উপজেলা বৃক্ষমেলায় ১ম স্থান অর্জন করে আসছি বলে জানান ফজলুল হক।

Comments (0)
Add Comment