হরিণাকু-ুতে নিজ ঘর থেকে স্বামী পরিত্যক্তা বৃদ্ধার অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার
কে মান্নান: ঝিনাইদহের হরিণাকু-ুর ধুলিয়ার গ্রামে নিজ ঘর থেকে স্বামী পরিত্যক্তা এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় যুবক আবুল বাশার নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে ওই বৃদ্ধার অর্ধগলিত লাশ তারই ঘরের মেঝেতে পরে থাকতে দেখেন। বাশারের চিৎকার চেচামেচিতে স্থানীয়রা জড়ো হতে থাকেন। স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় এ বৃদ্ধার মৃত্যু কি স্বাভাবিক না এটি হত্যাকান্ড তা নিয়ে শুরু হয় নানান রকম গুঞ্জন। খবর পেয়ে হরিণাকু-ু থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা সার্কেল) আরিফুল ইসলাম। নিহত স্বামী পরিত্যক্তা ফরিদা খাতুন (৫০) হরিণাকু-ু উপজেলার তাহেরহুদা ইউনিয়নের ধুলিয়া গ্রামের মৃত মুরাদ ম-লের মেয়ে।
জানা গেছে, ৩৫ বছর আগে কুষ্টিয়ার ইবি থানার বালিয়াপাড়ার আব্দুল কুদ্দুসের সাথে বিয়ে হয় ফরিদা খাতুনের। এ ঘরে জন্ম নেয় এক ছেলে ইসমাইল। উড়োনচন্ডি স্বামী ছেলে বৌ ফেলে ২৫বছর আগে হন নিরুদ্দেশ। সেসময় বাধ্য হয়েই সন্তানসহ বাবার বাড়িতে ফিরতে হয় ফরিদাকে। সেখানে জায়গা না হওয়ায় আধা কিলোমিটার দূরে কুমার নদের উপরিস্থলে নির্জন জমিতে দো-চালা টিনের ছাপড়া ও চাটাই ঘেরা ঘরে মা সন্তানের বসতি গড়ে ওঠে। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া গাভির দুধ বিক্রি ও পরের বাড়িতে গায়ে গতরে খেটে চলে জীবনযুদ্ধ। চোখ কান ফুটতেই ছেলে ইসমাইল মা ফরিদা খাতুনকে একা রেখে পাড়ি জমায় ঢাকায়। সেখানে গার্মেন্টসে কাজ করে প্রথম দিকে মায়ের খোঁজখবর নিলেও বর্তমানে মা ছিলেন সেই একা হতভাগী। এরই মাঝে গতকাল রোববার বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় যুবক আবুল বাশার নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে ওই বৃদ্ধার অর্ধগলিত লাশ তারই ঘরের মেঝেতে পরে থাকতে দেখে আতকে ওঠেন। বাশারের চিৎকার চেচামেচিতে স্থানীয়রা জড়ো হতে থাকেন। খবর পেয়ে হরিণাকুন্ড থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবেশী মৃত জোনাব শাহের ছেলে আমজাদসহ ৩২ জনের নামে আদালতে নারী নির্যাতনের মামলা করেন ফরিদা খাতুন। এ পরিবারের সদস্যদের সাথে তার ছিলো শত্রুতা। বিভিন্ন সময় অসহায় ফরিদা খাতুনকে শারিরীক ও মানসিকভাবে নির্যাতনও করতো তারা।
ফরিদার বোন হরিণাকু-ুর মান্দারতলা জোড়াপুকুরিয়া গ্রামের শিক্ষিকা রহিমা খাতুন বলেন, ফরিদা গত ঈদের দুদিন আগে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকার গরু বিক্রি করেছে। ওই টাকার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। ওই টাকার জন্য কেউ তাকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা সার্কেল) আরিফুল ইসলাম বলেন, মৃত্যু কারণ সম্পর্কে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। লাশের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments (0)
Add Comment