পাটাচোরা গ্রামে কৃষকের মেয়ে বিসিএস ক্যাডার

পরিবারে আনন্দের বন্যা : গ্রামবাসীকে খেতে দিলেন গরু জবাই করে

রতন বিশ্বাস: দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামের ইতিহাসে এই প্রথম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে কৃষকের মেয়ে উত্তীর্ণ হওয়ায় কৃষক পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে। গ্রামের মেয়ের সাফল্যে এলাকাবাসী গর্ববোধ করছে। মেয়ে বাড়িতে এসেছে এ খবরে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা ওই বাড়ীতে ভিড় করছে। এলাকার সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানই তার প্রধান লক্ষ্য জানিয়েছেন ওই গর্বিত গ্রামের মেয়েটি।

জানাগেছে, পাটাচোরা গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলামের মেয়ে রোকসানা খাতুন ৪২তম বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে নাম উত্তীর্ণের খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। রোকসানা খাতুনের বাবার পেশা কৃষি ও মা আমেনা খাতুন গৃহিণী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নিজ জমিতে হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে সংসার চালান। তাদের পরিবারের ৪ মেয়ে ১ ছেলে। রোকসানা সবার ছোট। সংসারে কৃষিই একমাত্র রোজগারের উৎস। বাবা মায়ের অসীম ধৈর্য্য, সাহস ও পরিশ্রমে আজ সফল তিনি। রোকসানা ছোট থেকে অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। তিনি প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত গ্রামে লেখাপড়া করেছেন। পাটাচোরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে গোল্ডেন এ প্লাস পান। ২০১২ সালে চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও এ প্লাস পান। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে ২০১৮ সালে এমবিবিএস পাস করেন।

মেধাবী রোকসানা জানান, ছোটবেলা থেকে মানুষের সেবা করাই ছিলো মূল লক্ষ্য। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ডাক্তার হওয়ায় স্বপ্ন দেখতে শুরু করি। মহান আল্লাহ সে স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এলাকায় অসহায় মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে কঠোর পরিশ্রম করে এ পর্যায়ে এসেছি। এছাড়া আমার প্রিয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাটাচোরা বিদ্যালয়ের সকল স্যারদের অসীম উৎসাহ ও শিক্ষাক্ষেত্রে প্রসারিত সহযোগিতা প্রদান করেছেন।

কৃষক বাবা জহিরুল ইসলাম জানান, ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার প্রতি ভীষণ মনোযোগী ছিলো তার। মেধাবী হওয়ায় স্বপ্ন দেখতাম প্রাথমিকে বৃত্তি পাবে। সে স্বপ্নও পূরণ করেছিলো। ছোট থেকেই আত্মবিশ্বাস তার মনে প্রবল ছিলো। অদম্য প্রচেষ্টায় সে এগিয়ে গেছে তার গন্তব্যে। বাকি জীবনটা দেশ ও দশের কল্যাণে নিবেদিত থাকবে এই প্রাত্যাশা করি। তার সাফল্যে এলাকাবাসী গর্বিত। এদিকে মেয়ে বাড়িতে এলে গতকাল বৃহস্পতিবার গরু-ছাগল জবাই করে পুরো গ্রামবাসীকে খেতে দিয়েছেন গর্বিত এই কৃষক বাবা।

Comments (0)
Add Comment