অর্থ আত্মসাৎ, জেল হাজতে কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা

ঝিনাইদহে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের প্রধান শাখা ও মাগুরা শাখা থেকে এক কোটি ২৩ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ব্যাংকের কর্মকর্তা নাজমুল হককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
তার বিরুদ্ধে ঝিনাইদহ কৃষি ব্যাংকের শাখা থেকে ৮৫ লাখ টাকা এবং মাগুরা শাখা থেকে ৩৭ লাখ ৩৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। ঝিনাইদহ শহরের কাঞ্চনপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নাজমুল হক সবশেষ মাগুরা কৃষি ব্যাংক শাখায় সেকেন্ড অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহে কৃষি ব্যাংকের মুখ্য আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক এনায়েত করিম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, প্রধান কার্যালয়কে আত্মসাতের এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে জানতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিরীক্ষা বিভাগের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) নির্মল কুমার ভট্টাচার্যকে প্রধান করে কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (এসপিও) অশিক আহম্মদ ও প্রিন্সিপাল অফিসার বিপ্লব মৈত্রকে। মাগুরা শাখার ম্যানেজার মোহাম্মদ মিনহাজ-উদ্দিন ২৩ আগস্ট মাগুরা সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন। পুলিশ অভিযোগটি জিডি হিসাবে নথিভুক্ত করে।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর মাগুরা শাখায় যোগদান করেন নাজমুল হক। গত ২৪ জানুয়ারি নাজমুল ব্যাংকের তহবিল থেকে দুই ধাপে ১৭ লাখ ৫১ হাজার ২০০ টাকা এবং ২০ লাখ ৩২ হাজার ৪৯১ টাকা নিজের ব্যাংক হিসাবে সরিয়ে নেন নাজমুল। পরে তিনি এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মঙ্গলবার রাতে ঝিনাইদহ কৃষি ব্যাংকের প্রধান শাখার ম্যানেজার সদর থানায় আত্মসাতের আরেকটি অভিযোগ করেন। অভিযোগে তিনি বলেছেন, শাখার সেকেন্ড অফিসার থাকাকালে নাজমুল হক ২০১৮ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দশ ধাপে ৮৫ লাখ সাতাশি হাজার দুইশ পঁচিশ টাকা সরিয়ে নেন তার নিজের সঞ্চয়ী হিসাবে। পরে তিনি তা তুলে নেন। পরে ব্যাংকের স্টাফরা নাজমুলকে ধরে পুলিশর কাছে সোপর্দ করা হয়। আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক এনায়েত করিম জানান, নাজমুল হককে ধরে মাগুরা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে কিছু টাকা তার কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে। একটি স্বীকারোক্তিমূলক লিখিত জবানবন্দিও দিয়েছেন তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেজারদের তদারকির ঘাটতি থাকলে তা তদন্তে বের হয়ে আসবে।
তিনি বলেন, মাগুরা ও ঝিনাইদহ থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ মামলা গ্রহণ করেননি। থানা পুলিশ দুটি অভিযোগই জিডি হিসাবে গ্রহণ করেন। কথা হয় ঝিনাইদহ থানার ওসি (তদন্ত) এমদাদুল হকের সঙ্গে। তিনি জানান, অভিযোগটি অর্থ আত্মসাতের হওয়ায় থানা মামলা গ্রহণ করেনি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব হচ্ছে দুদকের।

Comments (0)
Add Comment