অসুস্থ স্ত্রীকে মারধর : চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৫ দিনের মাথায় মৃত্যু : স্বামীকে আসামি করে মামলা

দামুড়হুদা ব্যুরো: দামুড়হুদায় অসুস্থ স্ত্রীকে মারধরের ৫ দিনের মাথায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিউলী খাতুন (৩৮) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। তিন সন্তানের জননী নিহত গৃহবধূ শিউলী খাতুন দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের উজিরপুর গাংপাড়ার নাজমুলের স্ত্রী এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের জালশুকা গ্রামের আশরাফ আলীর মেয়ে। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ভাই ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে নাজমুলকে আসামি করে গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। গত ১১ জুলাই শনিবার বিকেলে স্বামী নাজমুল তার স্ত্রীকে মারধর করে। তাকে পিতার বাড়িতে নিয়ে চিকিৎসার এক পর্যায়ে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তির পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত গৃহবধূর মৃতদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আজ শুক্রবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদর উপজেলার জালশুকা গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর মেয়ে শিউলী খাতুনের সাথে ১৮ বছর আগে দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গাংপাড়ার মৃত আকবার আলীর ছেলে নাজমুলের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে তিনটি পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে আকাশের বয়স ১৭, মেজ ছেলে আসিফের ১১ এবং ছোট ছেলে শুভ’র বয়স ৮ বছর। তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ শিউলী খাতুন দীর্ঘদিন যাবত ডায়বেটিস রোগে ভুগছিলেন। মাঝে তার ডান পায়ে পেরেক ঢুকে পড়ায় পচন দেখা দেয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গৃহবধূ শিউলী খাতুন সাংসারিক কাজকর্ম ঠিকমতো করতে পারতেন না। সাংসারিক কাজকর্ম করতে না পারায় স্বামী নাজমুল তাকে প্রায়ই মারধর করতো এবং অবহেলার চোখে দেখতো। তাকে ঠিকমতো চিকিৎসাও করাতো না স্বামী নাজমুল। সাংসারিক নানা বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের এক পর্যায়ে গত ১১ জুলাই শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্বামী নাজমুল অসুস্থ স্ত্রীকে কিলঘুষি, চড়-থাপ্পড় মেরে আহত করে। বিষয়টি জানতে পেরে গৃহবধূ শিউলীর মা আলতা বানু পরদিন ছুটে আসেন মেয়ের বাড়ি উজিরপুরে। মা আলতা বানু মেয়েকে নিজ বাড়ি জালশুকা গ্রামে নিয়ে যান এবং বাড়িতে রেখেই চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গৃহবধূ শিউলীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাকে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। ওখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর ভাই ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে নাজমুলকে আসামি করে গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তিনি আরজিতে বলেছেন, স্বামী নাজমুল তার বোনকে মেরে ফেলার উদ্দেশে মারধর না করলেও তার মারধরের আঘাতেই আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে। দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, নিহত গৃহবধূর মৃতদেহ চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আজ শুক্রবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে।

Comments (0)
Add Comment