আলমডাঙ্গা থেকে মাকে নিয়ে ঢাকায় গেলেন ইউরোপ প্রবাসী ছেলে মফিবুল

হাটবোয়ালিয়া/ ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি:ছেলে ইউরোপ প্রবাসী। বহুদিনের শখ, মাকে নিয়ে যাবেন স্বপ্নের ইউরোপ ভ্রমণে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়নের বগাদী গ্রামের প্রবাসী মফিবুল বিশ্বাস এক বিরল ও অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করলেন। অজপাড়াগাঁ থেকে নিজের জন্মদাত্রী মাকে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকা নিয়ে গেলেন তিনি।

জানা যায়, বগাদী গ্রামের ক্লাব পাড়ার মৃত ওলিদ বিশ্বাসের ছেলে মফিবুল বিশ্বাস ইউরোপের একটি দেশে থাকেন। তিনি তার বৃদ্ধা মা মোছাঃ মদিনা খাতুনকে ইউরোপ ঘুরিয়ে দেখাতে চেয়েছিলেন। প্রবাসে থাকলেও মায়ের প্রতি এই গভীর ভালোবাসা এবং শখ পূরণের জন্য তিনি এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
গতকাল বুধবার বেলা ৩ টার দিকে বগাদী গ্রামের খেলার মাঠে ভাড়া করা হেলিকপ্টারটি অবতরণ করে। গ্রামের মানুষজন এমন দৃশ্য এর আগে কখনও দেখেনি। তাই এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই গ্রাম এবং আশেপাশের এলাকা থেকে শত শত উৎসুক জনতা হেলিকপ্টার দেখতে ভিড় জমায়। সৃষ্টি হয় এক উৎসবমুখর পরিবেশ।
মফিবুল বিশ্বাস সসম্মানে তার মা মোছাঃ মদিনা খাতুনকে হেলিকপ্টারে তোলেন। মায়ের চোখেমুখে তখন আনন্দের ঢেউ। ছেলে এবং মা দু’জনেই গ্রামবাসীর ভালোবাসা ও শুভ কামনা নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। ঢাকা থেকে তারা বিমানযোগে ইউরোপের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন বলে জানা গেছে।
এই বিষয়ে মফিবুল বিশ্বাস জানান, “ছোটবেলা থেকেই মায়ের অনেক কষ্ট দেখেছি। আজ প্রবাসে নিজের একটি ভালো অবস্থান তৈরি করতে পেরেছি। মা সব সময় চাইতেন, যেন বিদেশ বিভুঁই ঘুরে দেখি। আমার ইচ্ছে ছিল মাকে সঙ্গে নিয়েই সেই স্বপ্ন পূরণ করব। তার যাত্রাটা যেন স্মরণীয় হয়, তাই এই ছোট আয়োজন।”
গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিরা বলেন, মফিবুল তার মায়ের প্রতি যে সম্মান ও ভালোবাসা দেখালেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং এই এলাকার জন্য একটি অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত। এই ঘটনা বগাদী গ্রামের ইতিহাসে এক বিশেষ নজির সৃষ্টি করল । যা শুধু বগাদী নয়, পুরো চুয়াডাঙ্গা জেলার জন্যই গর্বের বিষয়।
স্থানীয় প্রশাসন ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে দোয়া ও মোনাজাত করে মফিবুল বিশ্বাস হেলিকপ্টারযোগে তাঁর মাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে উড্ডয়ন করেন। ঢাকা থেকে তাঁরা ইউরোপের উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।
মায়ের প্রতি সন্তানের এমন নিবেদন সমাজে এক ইতিবাচক বার্তা দিল, যেখানে পারিবারিক বন্ধন এবং প্রবীণদের সম্মান জানানোর গুরুত্ব বিশেষভাবে তুলে ধরা হলো।