এবার নিজ পরিচয়ে ইউরোপ যাচ্ছে মেহেরপুরের হিমসাগর জিআই স্বীকৃতি পাওয়ায় ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দ্বার আরও উন্মোচিত হবে

মেহেরপুর অফিস: ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় মেহেরপুরের হিমসাগর আমের চাহিদা বেড়েছে। রফতানি হচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। বাগান মালিকরা বলছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ব্যবসায়িক সম্ভাবনার দ্বার আরও উন্মোচিত হবে। স্বাদ, মিষ্টতা আর অনন্য সুঘ্রাণের কারণে সুখ্যাতি পেয়েছে মেহেরপুরের হিমসাগর আম। কয়েক বছর ধরেই দেশ পেরিয়ে ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যসহ নানা দেশে রফতানি হচ্ছে এই জেলার আম। তবে আম ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এতদিন দেশ ও বিদেশের বাজারে জেলার হিমসাগর আম বিক্রি হয়েছে রাজশাহীর নামে। এদিকে, চলতি বছরের ২৭ মে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে মেহেরপুরের হিমসাগর আম। এতে সব দুঃখ-কষ্ট ঘোচার আশা বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের। মিলবে সরকারের পক্ষ থেকে সব সুযোগ-সুবিধা। মেহেরপুর শহরের সবচাইতে বড় আম বাগানের মালিক সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর নিজ উদ্যোগে কিছু হিমসাগর আম বাজারে রফতানি করি। রয়েছে গ্যাপের সনদপত্রও। তারপরও এবার রফতানিযোগ্য ১২০ মেট্রিক টন আম নিয়ে বিপাকে পড়েছি। আম প্রস্তুত করলেও এখনও বায়াররা যোগাযোগ করেননি। তবে জেলার সুস্বাদু হিমসাগর আমটি সম্প্রতি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। এতে আশা জাগছে রফতানি বাড়ার।’ বাগান মালিক মারুফুজ্জোহা চেষ্টা করছেন গ্লোবাল গ্যাপের সনদপত্র প্রাপ্তির জন্য। তিনি বলেন, জিআই পণ্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ার কারণে এবার গ্যাপের সার্টিফিকেট পেতে সহজ হবে। এর মাধ্যমে এ অঞ্চলের আম ব্যবসায়ীরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে আম রফতানি করতে পারবে। তবে এই সুযোগে কাজে লাগাতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ ও পরিবহন সুবিধাসহ আম রফতানির প্রক্রিয়াগুলোতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন বাগান মালিকরা। তারা বলেন, গ্লোবাল গ্যাপের সনদপত্র পাওয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে আম রফতানিতে বিড়ম্বনা কমবে। এর মাধ্যমে মেহেরপুরের হিমসাগর আমের পরিচিতি বেড়েছে। এতে দাম ভালো পাওয়ার পাশাপাশি রফতানিও বাড়বে। হিমসাগর আম ব্র্যান্ড হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় দেশের বাজারেও এর কদর বাড়ছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক সামসুল আলম বলেন, যখন কোনো একটি পণ্য জিআই তালিকাভুক্ত হয়, তখন পণ্যটির সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে বাড়ে চাহিদা ও দাম। আম উৎপাদনে কৃষকদের সব ধরনের সহায়তা করা হবে। উল্লেখ্য, জেলায় ২ হাজার ৩৬৬ হেক্টর আমের বাগান রয়েছে। এর মধ্যে হিমসাগর আমের বাগান রয়েছে এক হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে।