ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গায় জনতার ঢল, সহস্রাধিক নেতা-কর্মী নিয়ে বিশাল শোভাযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার: শরীফুজ্জামান শরীফ বললেন,শহীদ জিয়াই গণতন্ত্রের পথপ্রদর্শক, ৩১ দফাই মুক্তির পথ
খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ, জাতীয় পতাকা উত্তোলনসহ  শহরজুড়ে স্লোগান,ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করেছে। এই দিনে চুয়াডাঙ্গা শহর প্রত্যক্ষ করেছে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, যা এক বিশাল গণসমাবেশের রূপ নেয়। গতকাল শুক্রবার দিনব্যাপী কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন, আলোচনা সভা, বিশাল শোভাযাত্রা এবং দুস্থ ও অসহায়দের মাঝে খাবার বিতরণ।
সকালে চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। এরপর বিকেল চারটায় সাহিত্য পরিষদে অনুষ্ঠিত হয় এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা। সভা শেষে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো: শরীফুজ্জামান শরীফের নেতৃত্বে সাহিত্য পরিষদ চত্বর থেকে এক বিশাল শোভাযাত্রা বের করা হয়।

শোভাযাত্রাটি শহরের দোয়েল চত্বর, কোর্ট রোড, পুরাতন হাসপাতাল রোড, বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বর, শহীদ আবুল কাশেম সড়ক, পৌরসভা মোড়, কবরী রোড, কলেজ রোড হয়ে পুনরায় সাহিত্য পরিষদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এই শোভাযাত্রার অগ্রভাগ যখন শহীদ হাসান চত্বর পার হচ্ছিল, তখনও এর শেষভাগ কোর্ট মোড়ের দোয়েল চত্বরে ছিলো। হাজার হাজার নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে পুরো চুয়াডাঙ্গা শহর ধানের শীষের এবং বিএনপির বিভিন্ন স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। এ সময় শোভাযাত্রার সামনে থাকা মো: শরীফুজ্জামান শরীফ সাধারণ মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো: শরীফুজ্জামান শরীফ দিবসটির তাৎপর্য ও বিএনপির নীতি অনুসরণ করে বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর কোনো সাধারণ দিন নয়, এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের টার্নিং পয়েন্ট। এই দিনে আমাদের গণতন্ত্রের পথপ্রদর্শক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশের ক্রান্তিলগ্নে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে স্বাধীনতার চেতনাকে পুনরুদ্ধার করেছিলেন। এই দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়—সংহতি, জাতীয়তাবাদ এবং জনগণের সার্বভৌমত্বই আমাদের মূলনীতি।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম করছি, সেই চেতনার বীজ বপন হয়েছিল এই দিনেই। আমরা ভোট দিয়ে আমাদের পছন্দের নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটাতে পারিনি। স্বৈরাচারী সরকারের কারণে সমস্ত অধিকার থেকে আমরা বঞ্চিত ছিলাম। আজ আমি আপনাদের মাঝে এসেছি সেই অধিকার পুনরুদ্ধারের বার্তা নিয়ে। আমাদের নেতা তারেক রহমান সেই কারণেই ৩১ দফা কর্মসূচী দিয়েছেন, যা এই দেশের কৃষক, শ্রমিক ও খেটে খাওয়া মানুষের মুক্তির দলিল। শহীদ জিয়ার সৈনিক হিসেবে আমরা আপনাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের পাশে থাকা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের লক্ষ্য—আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষকে বিজয়ী করে একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ, উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা ‘

মোঃ শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘আজ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর। এইদিনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে সিপাহী জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে গৃহবন্দি থেকে মুক্ত করা হয়েছিলো। বাংলাদেশের সকল ক্লান্তিলগ্নে এই জাতীয়তাবাদী দল এবং এই দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের পাশে এসে দাড়িয়েছেন। বাংলাদেশে স্বাধীনতার ঘোষনা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন। স্বাধীনতা ঘোষনা করেই তিনি থেমে থাকেননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করে সারা বাংলাদেশে সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলেন। একটি স্বাধীন রাষ্ঠ্র উপহার দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি আবার ব্রাকে চাকরীতে ফিরে গেছেন। যার ফলে এই বাংলাদেশে যারা ক্ষমতায় ছিলো তাদের স্বেচ্ছাচারিতায় একনায়কতন্ত্র কায়েমের পরে সারা বাংলাদেশের মানুষ যখন দিশেহারা, সমস্ত মিডিয়া যখন বন্ধ ছিলো, মানুষের বাক স্বাধিনতা হনন করা হয়েছিলো, ঠিক তার পরবর্তীতে একটি দূর্ঘটনার মাধ্যমে শেখ মুজিবের মৃত্যুর পর এই বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছিলো। একেক সময় একেক সরকার ক্ষমতার লোভে ক্ষমতার পালা বদল করছিলো। ঠিক জাতীর সেই ক্লান্তিলগ্নে আমাদের নেতা শহীদ প্রেসিডেন্টর জিয়াউর রহমান বাংরাদেশের হাল ধরেছিলেন। এই আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের তিনি প্রবক্তা।’

দিনব্যাপী কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল মানবিক দিক। মাগরিবের নামাজের পর চুয়াডাঙ্গা বড় বাজার শহীদ হাসান চত্বরে দিনমজুর, রিকশাওয়ালা, ভ্যানচালক, খেটে খাওয়া মানুষ ও অসহায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন মো: শরীফুজ্জামান শরীফ। এছাড়া নেতা-কর্মীরা চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানে খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে খাবার বিতরণের মধ্যদিয়ে দিনটি উৎযাপন করেন।

চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা। দিনব্যাপী এ সব কর্মসূচীতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি,সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম নজু, সিনিয়র সহ-সভাপতি এম,আর, মুকুল, পৌর বিএনপির  সিনিয়র সহ-সভাপতি রাফিতুল্লাহ মহলদার, সাধারন সম্পাদক মাহামুদুল হক পল্টু, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপটন, যুগ্ন সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগাঠনিক  সসম্পাদক  মহাবুল হক মহাবুব, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা,জেলা মতসজিবি দলের আহবায়ক পৌর বিএনপির সাংগাঠনিক সম্পাদক সোহেল মালিক সুজন, কামরুজ্জামান বাবলু,  জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশীদ ঝন্টু, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদ মোহাম্মদ রাজিব খান, জেলা জাসাস এর সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম,জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মাহমুদ,  জেলা ওলামা দলের আহবায়ক মওলানা আনোয়ার হোসেন,জেলা মহিলা দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর শেফালী বেগম, সাধারন সম্পাদক জাহানারা পারভীন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাসরীন পারভীন,জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ সরোয়ার রোমান,  জেলা আইনজীবী ফোরাম এর আহবায়ক এড আ স ম আব্দুর রউফ, আইনজীবী  সদস্য এড মানি খন্দকার,  চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি ইনতাজ আলী, সহ-সভাপতি  ও কাউন্সিলর আবুল হোসেন, খাইরুল ইসলাম,  যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান মুক্ত,জেলা সেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ন সম্পাদক হামিদ উদ্দিন বাবু, হামিদুর রহমান টুটুল, সাংগাঠনিক সম্পাদক শামিম হাসান টুটুল, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি খন্দকার আরিফ,   জেলা ওলামা দলের সদস্য সচিব হাফেজ মওলানা মাহাবুব হক, যুগ্ম আহবায়ক গোলাম কিবরিয়া স্বপন, সদর উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মতিউর রহমান মিশর,  সদস্য সচিব মহলদার ইমরান রিন্টু,সদস্য আব্দুর রশিদ, পৌর যুবদলের আহবায়ক বিপুল হাসান হ াজি, সদস্য সচিব আজিজুল হক আজিজুল, যুগ্ম আহবায়ক অপু মালিক,সদর উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক এম,এ হাসান, পৌর সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক রুবেল হাসানসহ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, মহিলাদল ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।