দর্শনা অফিস: কেরুজ কমপ্লেক্সের বিভিন্ন বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ স্থানীয়, জাতীয় এবং অনলাইন পত্রিকায় একাধীক সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ সংবাদের সত্যতা যাচাইয়ে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে গঠন করা হয়েছে উচ্চ পদস্থ ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। এ কমিটিকে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের তাগিদ থাকলেও পেরিয়ে গেছে ১০ দিন। জানা গেছে, ২৯ জুন বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের (অতিরিক্ত দায়িত্বে) চেয়ারম্যান রশিদুল হাসান স্বাক্ষরিত পত্রে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় কর্তৃক কেরুজ চিনিকলের বিভিন্ন বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্তের জন্য কমিটি গঠনের সুপারিশ করেন। ওই পত্রের প্রেক্ষিতেই গত ৯ জুলাই শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব সিদ্ধার্থ ভৌমিক স্বাক্ষরিত পত্রে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটিকে আগামি ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয় বরাবর লিখিত প্রতিবেদন দাখিলের জন্যও বলা হয়েছে। কমিটি গঠনের ১০ দিন অতিবাহিত হলেও এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে কিনা তা জানা যায়নি। এ পর্যন্ত তদন্তের জন্য কেরুজ চিনিকল এলাকায় তদন্ত কমিটি পরিদর্শন করেছেন কিনা তা পরিষ্কার হয়নি কারো কাছে। কেরুজ ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি এখনো পর্যন্ত কেরুতে তদন্তের জন্য আসেনি। আশা করা যাচ্ছে আগামি ২/১ দিনের মধ্যে আসতে পারেন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌদুরীকে। সদস্য সচিব বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের পরিচালক (বাণিজ্যিক) (উপসচিব) আজহারুল ইসলাম, সদস্য হলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মনোয়ার হাসান খান। তদন্ত কমিটিকে কেরুজ দেশী মদ বোতলজাতকরণের গৃহীত উদ্যোগটি অর্থনৈতিকভাবে লাভজন কিনা তা যাচাই করা, উদ্যোগটি যথাযথ আইন বিধি মেনে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে হয়েছে কিনা, বোতলজাতকরণের ফলে সরকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে কিনা এবং বেসরকারিখাত তা থেকে লাভবান হবে কিনা তা খতিয়ে দেখা। দেশীয় মদ বাজারজাতকরণের লক্ষ্যে প্লাস্টিক বোতল ক্রয় কোন পদ্ধতিতে করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা, সে পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্রয় বিধিমালা অনুসরণ করা হয়েছে কিনা তা যাচাই করা। দেশী মদ ও ফরেন লিকারের উৎপাদন ও বিক্রয় হ্রাস পেয়েছে কিনা এবং পেয়ে থাকলে তার কারণ ও ফলে সরকার লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে কিনা। কেরুজ বন্ডেড ওয়ার হাউজে দায়িত্বে থাকা পূর্বের ইনচার্জদের কাছ থেকে অর্থ দাবি ও সে অর্থ দিতে না পারায় তাদের বদলি করা হয়েছে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা, বর্তমানে ওয়ার হাউজে দায়িত্ব থাকা ইনচার্জদের অবৈধ সুবিধার বিনিময়ে পদায়ন করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় আখ চাষ হ্রাস পেয়েছে কিনা এবং কৃষকরা আখচাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে কিনা তা যাচাই করে ১৫ দিনের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ে লিখিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে কেরুজ চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাব্বিক হাসান বলেন, আমি যোগদানের পর থেকে আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালনে কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সচেষ্ট করেছি। এ প্রতিষ্ঠানকে আরো লাভজনক করতে যা যা করনীয় তা করেছি। আখচাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সভা-সমাবেশ, মাঠ পরিদর্শন আখচাষিদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করেছি। বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের ততকালীন চেয়ারম্যান মহোদয়ের নির্দেশক্রমে দেশীয় মদ বোতলজাতকরণ প্রক্রিয়ায় যতটা সম্ভব ভূমিকা রেখেছি। সরকারের মূল্যবান এ সম্পদ রক্ষায় ও আরো বেশী লাভজনক করতে অবিরাম পরিশ্রম করছি। কতিপয় শ্রমিক-কর্মচারি নিজেদের স্বার্থ হাসিলে ব্যার্থ হওয়া অপপ্রচারে মরিয়া হয়ে উঠেছে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তির সৃস্টি করেছে। বিশ্বাস করি সঠিক তদন্তে তা পরিস্কার হবে ইনশাল্লাহ।