স্টাফ রিপোর্টার: নতুন বস্তার পরিবর্তে পুরানো বস্তা কিনে সরকারের ১০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গার তিন খাদ্য কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ঝিনাইদহ জেলা দুর্নীতি দমন অফিস। বুধবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন, ঝিনাইদহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. খালিদ মাহমুদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন, যার মামলা নং ০৪/২৫। মামলার আসামিরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিয়ারাজ হুসাইন, চুয়াডাঙ্গা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসান মিয়া, আলমডাঙ্গা উপজলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আলীম, ঢাকার এমএসিএস জুট ফাইবারের প্রোপাইটার মোহাম্মদ আলী হোসেন, ওই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার সোহেল রানা ও চুয়াডাঙ্গা সদরের কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আসিফ ইকবাল। মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে বস্তা সরবরাহকারীর নিকট থেকে চতুরতার আশ্রয় নিয়ে নতুন বস্তা গ্রহণ না করে মানহীন পূর্বের ব্যবহৃত পুরাতন ও ব্যবহার অনুপযোগী ২০ হাজার এক’শ বস্তা গ্রহন করেন। আসামিরা এহেন অপকর্ম করে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ০৩৩ টাকা আত্মসাত করে প্রতারণা ও ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও অসদাচরণ করে দ-বিধির ৪০৬/৪২০/৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেন। ঝিনাইদহ দুদক সুত্রে জানা গেছে, দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ে চুয়াডাঙ্গা সরকারি খাদ্য গুদামে নতুন বস্তা না কিনে পুরাতন বস্তায় ধান-চাল করে নতুন বস্তা কেনার অর্থ আত্মসাত করার অভিযোগ করা হয়। গত ১৭ মার্চ উপরোল্লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সহকারী পরিচালক মো. বজলুর রহমানের নেতৃত্বে সহকারী পরিচালক মো. খালিদ মাহমুদ এবং সহকারী পরিদর্শক মো. কাওসার আহমেদ প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করে সত্যতা পান। দুদক কর্মকর্তারা দেখতে পান খাদ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে এমএসিএস জুট ফাইবার প্রতিষ্ঠানটি ছয় লক্ষ পিছ বস্তা সরবরাহের জন্য একটি চুক্তি সম্পাদন করেন। কিন্তু চুক্তি অনুযায়ী সরবরাহকৃত সব বস্তার মধ্যে ২০ হাজার একশ পিছ পুরাতন ও ব্যবহার অনুপযোগী বস্তা সরবরাহ করেন। ওই ত্রুটিযুক্ত বস্তাসহ মোট বিরানব্বই হাজার পিস বস্তা ওসিএলএসডি মো. মিয়ারাজ হুসাইন স্বাক্ষরের মাধ্যমে গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বস্তা যাচাই কমিটির সদস্য কৃষি অফিসার আসিফ ইকবাল ও জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. হাসান মিয়া গ্রহণকৃত মালামালের সঠিকতা ও গুনগত মান যাচাই না করে ভুয়া প্রত্যয়ন প্রদান করেন। ওই প্রত্যয়নপত্রের প্রেক্ষিতে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা হাসান মিয়া খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর মের্সাস এমএসিএস জুট ফাইবার কর্তৃক সরবরাহকৃত বিরানব্বই হাজার পিচ ৩০ কেজির ধারণক্ষম নতুন খালি বস্তা চুক্তির শর্ত মোতাবেক প্রাপ্ত হয়েছেন মর্মে উক্ত পত্রে উল্লেখ করেন। আসামিগণ পরস্পর যোগসাজসে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে অসৎ উদ্দেশ্যে বস্তা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নতুন বস্তা গ্রহণ না করে মানহীন পূর্বের ব্যবহৃত পুরাতন ও ব্যবহার অনুপযোগী বস্তা গ্রহন করে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ০৩৩ টাকা আত্মসাত করেন।