স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার দীননাথপুর জামেয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া কওমিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে দুই শিশু শিক্ষার্থীকে চেলা কাঠ দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় দুই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১১সেপ্টেম্বর) বেলা ৩ টার দিকে মাদ্রাসায় এ মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় ও শিক্ষার্থীদের স্বজনরা বিচারের দাবিতে ফুসে উঠেছেম
আহত দুই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুরে হুজুর ইব্রাহিমের ভাগ্নে হুজায়ফা সহ আমরা চারজন মাদ্রাসার মসজিদে ঘুমিয়েছিলাম,। ঘুমের মধ্যে ভুলবশত হুজুরের ভাগ্নে হুজাইফার গায়ে পা লেগে গিয়েছিল। বিষয়টি হুজুর নিজ চোঁখে দেখেন। ওঘুমের মধ্যেই আমাদেরকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। আমাদের দুইজন কে হুজুর তার কক্ষে নিয়ে আটকিয়ে মেহগনি গাছের চেলা দিয়ে বেধড়ক মারধর করে।
দুই শিশু শিক্ষার্থী জানায়, মারধরের পর হুজুর আমাদের বলেন, আমরা যদি মারধরের কথা বাড়িতে বলি তাহলে আমাদেরকে জবাই করে টুকরো টুকরো করে ফেলবে অথবা মাদ্রাসার ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলবে।
আহত এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, আমি বাড়িতে কাজ করছিলাম। এসময় আমার ছেলে খোড়াতে খোড়াতে বাড়িতে আসে। দেখি তার গায়ে ধুলোবালি লেগে আছে। ছেলেকে জিজ্ঞেস করি কি হয়েছে। ছেলে জানায়, আমরা সবাই ঘুমিয়েছিলাম। ঘুমের মধ্যে হুজুরের ভাগ্নের গায়ে আমার পা লেগে যায়। এতে হুজুর দেখে ফেলে এবং নির্মমভাবে পিটিয়েছে। আমি ছেলের জামা খুলে দেখি পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন। আমার সন্তান অন্যায় করেছে সেটা আমাদেরকে বলতে পারতেন। কেন এইভানে মারবে? আমরা হুজুরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
আহত এক শিক্ষার্থীর পিতা জানান, কতটা নির্মমভাবে আমার ছেলেসহ দুজনকে পিটিয়েছে এই হুজুর। এর আগেও এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়েছিল। ছেলে অন্যায় করলে আমাদের জানালে আমরা ব্যবস্থা নিতাম। সামান্য ঘুমের ঘরে তার ভাগ্নের গায়ে পা লাগার জন্য এভাবে মারতে হবে? আমি মামলা করব। আমি এই হুজুরের বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক ইব্রাহিম এবং মাদরাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। এ কারণে তাদের মন্তব্য জানা যায়নি।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মেহেবুবা মুস্তারী মৌ দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, দুজনই মারাত্মকভাবে জখম হয়েছে। শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তাদের দুজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি) খালেদূর রহমান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে বলেন, দুই শিশু শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি আমি জেনেছি। তাদের পরিবারকে থানায় এসে মামলা বা অভিযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রাত ১১টা পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।