চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রাম এখন গরু বিক্রির হাট

বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দোস্ত গ্রাম এখন গরু কেনাবেচার হাটে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে পোষার জন্য খরিদাররা কিনে নিয়ে যাচ্ছে বাছুর গরু। ফলে প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যাঅবদি মানুষের পদচারণায় মুুখরিত হয়ে উঠেছে দোস্ত গ্রাম। কোনোপ্রকার মধ্যস্থতা ছাড়াই নিজের পছন্দের মতো গরু কিনতে পারছে খরিদদাররা। করোনায় লকডাউনে জেলার কোথাও পশু বিক্রির হাট না বসায় দোস্ত গ্রামের প্রায় অর্ধশত ব্যাপারী দেশের উত্তরবঙ্গ থেকে এসব বাছুর গরু কিনে এনে এলাকাতে বিক্রি করছে। বাছুর গরুর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় দাম একটু বেশিই পড়ছে।
কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গ্রাম কিংবা শহরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এখন গরু মোটাতাজা করে থাকে। কোরবানির ঈদে বড় গরু বিক্রি করে আগামী ঈদে বিক্রির জন্য বাছুর গরু কিনে থাকে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশে লকডাউন চলছে। এ লকডাউনে পশু বেঁচা বিক্রির হাট বন্ধ। আর এ সুযোগে দেশের উত্তরবঙ্গের আমপাড়া হাট থেকে ভোরবেলা বাছুর গরু আমদানি করে নিয়ে আসছে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নেহালপুর ইউনিয়নের দোস্ত গ্রামের প্রায় অর্ধশত গরুর ব্যাপারী। সকাল হলেই গ্রামের মধ্যদিয়ে বয়ে যাওয়া পাকা সড়কের ধারে প্রতিটি ব্যাপারী তাদের বাড়ির সামনে ঠিক পশুহাটে বেচা-বিক্রির মতো করে বাছুর গরু সারিবদ্ধভাবে বেঁধে রেখেছে। নিকটবর্তী কিংবা দূরদুরান্ত থেকে খরিদ্দাররা পোষার জন্য এসব বাছুর গরু কিনে নিয়ে যাচ্ছে। গরু কিনতে আসা আসলাম, তসলিম, সালাম, শুকুর আলী জানালেন, হাটের মতো এখানে খাজনা দেয়া বা অন্যকোনো ঝুট ঝামেলা নেই। সেই সাথে নেই দালারের টানাটানি। দাম একটু বেশি হলেও দেখেশুনে কিনতে পাচ্ছি। এবছর বেশির ভাগ মানুষেরই পছন্দ লাল রঙের বাছুর। গত বছরের তুলনায় এবছর গরু প্রতি ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেশি পড়ছে। বড় গরুর তুলনায় বাছুর গরুর মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমান বাজারে একটি বাছুর গরু ৪০ থেকে ৭০ হাজার কোনো কোনো ক্ষেত্রে আরও বেশি টাকায় বেচা-বিক্রি হচ্ছে। বাছুর গরু বিক্রেতারা জানালেন, মাংসের হিসাব করলে বাছুর গরুর মাংস প্রায় ২ হাজার টাকা পড়ে যাচ্ছে। যারা কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু পালন করে থাকেন তারা আসছে এসব বাছুর গরু কিনতে। লকডাউন কেটে গেলে আর ভারত থেকে বাছুর গরু এলে দাম এমন থাকবে না। তারা আরও বলেন, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে তাই বিক্রিও বেশি দামেই করতে হচ্ছে। যার কারণে বেচা-বিক্রিতে ক্রেতার সাথে বেশি কথা খরচ করতে হচ্ছে। এবছর বেশি লাভের আসায় যারা রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে গ্রামের হাট থেকে গরু কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন অধিকাংশ ব্যাপারীর লোকশান হয়েছে। গ্রাম থেকে ধারে কিনে নিয়ে যাওয়ার দাম পরিশোধ করতে গড়িমশি শুরু করে দিয়েছে। তবে দোস্ত গ্রামের এ হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে থাকছে গ্রামসহ ক্রেতা-বিক্রেতারা।

 

Comments (0)
Add Comment