চুয়াডাঙ্গার বেগমপুর কলোনিপাড়ায় সরকারি খাল ভরাট করে স্থাপনা তৈরির পাঁয়তারা : এলাকাবাসীর মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বেগমপুর কলোনিপাড়ায় হিজলগাড়ি-উথলী আঞ্চলিক সড়কের পাশে খাস খতিয়ানভুক্ত নয়নজুলি হিসেবে পরিচিত খাল ভরাট করা হচ্ছে। মাসুদ ফারাজি নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে ১৫ ফুট গভীর এই জমি ভরাট করে স্থাপনা তৈরির পাঁয়তারা করায় প্রতিবাদে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে।
বর্ষা মরসুমে এলাকাবাসীর পানি নিস্কাশনের প্রধান অবলম্বন এই নয়নজুলি ভরাটের প্রতিবাদ ও তা উদ্ধারের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে। মানববন্ধনে বিভিন্ন বয়সী বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় এলাকাবাসীর পক্ষে জাহিরুল ইসলাম, মহিদুল ইসলাম, আবুবকর সিদ্দিক শ্যামল, সুলতান আহমেদ, সাদ্দাম হোসেন ও অহিদুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, সরকারি কালভার্ট দিয়ে এলাকাবাসী পানি নিষ্কাশন করে থাকে। যা এই নয়নজুলিতে গিয়ে পড়ে। ফলে, এলাকার শতাধিক পরিবার বর্ষা মরসুমে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পেয়ে থাকে। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনিক অনুমোদন ছাড়া ৩ একর ধানী জমিতে মাসুদ ফারাজি পুকুর খনন করছেন এবং উত্তোলিত মাটি দিয়ে নয়নজুলি ভরাট করছেন।
এলাকাবাসীর দাবি ভরাট প্রক্রিয়া এখনই বন্ধ করা না গেলে শতাধিক পরিবার স্থায়ী জলাবদ্ধতার মধ্যে পড়বে। সরকারি এই নয়নজুলি যাতে কেউ ভরাট করে দখলে না দিতে পারে সেজন্য তারা প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
সরেজমিন বুধবার দেখা গেছে, ধানী জমিতে মাসুদ ফারাজি যে পুকুর খনন করছিলেন, তা প্রায় শেষের দিকে। ১৫ ফুট গভীর ও ৮৫ ফুট চওড়া এই নয়নজুলির বেশ কিছু অংশ মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এলাকাবাসী এই নিয়ে বারবার প্রতিবাদ করেও কোনো লাভ হয়নি। রাতের বেলায় এক্সাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি তুলে ভরাট কাজ চালানো হয়। সমস্যা সমাধানে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে বেগমপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে সম্প্রতি লিখিত অভিযোগ করা হয়।
ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৬ জুন মাসুদ ফারাজিকে অনুমোদনহীন পুকুর খনন করতে নিষেধ করলে তিনি মুচলেকা দিয়েছেন। তিনি বলেন, নয়নজুলি যাতে ভরাট না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত মাসুদ ফারাজির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
মাসুদের চাচাতো ভাই মো. শামীম রেজা বলেন, ‘ধানী জমিতে পুকুর খনন করতে হলে অনুমোদন নেয়ার বিষয়টি তাদের জানা ছিলো না। পুকুরে আসা-যাওয়ার জন্য মাত্র ২০ ফুট নয়নজুলি ভরাট করা হয়েছে। এতে এলাকাবাসীর বেশি ক্ষতি হওয়ার কথা নয়।’

Comments (0)
Add Comment