চুয়াডাঙ্গায় ঋণের কিস্তি আদায়ে মানা হচ্ছে না সরকারি নির্দেশনা

লকডাউন শিথিলের পরপরই এনজিওকর্মীদের বেপরোয়া আচরণ : গ্রাহক হয়রানি চরমে

স্টাফ রিপোর্টার: লকডাউন শিথিলের পরপরই এনজিওকর্মীদের আচরণ বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ঋণের কিস্তির টাকা নিতে গিয়ে গ্রাহকদের সাথে অমানবিক আচরণ করছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, কোন গ্রাহক কিস্তির টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাদের ঋণের সুদ বেড়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে কোনো ঋণ দেয়া হবে না বলেও জানানো হচ্ছে। ফলে অনেকেই স্থানীয়ভাবে চড়া সুদে টাকা ধার নিয়ে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করছেন। অন্যদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণের কিস্তি আদায়ে সরকারি নির্দেশনা মানতে হবে। কিস্তির টাকার জন্য কোনো গ্রাহককে জোর করা যাবে না। যদি কোনো গ্রাহক আর্থিক অক্ষমতার কারণে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি অপরিশোধিত থাকে তাও ৩০ জুন পর্যন্ত কোনো কিস্তি/ঋণ বকেয়া বা খেলাপি দেখানো যাবে না। এ সংকটময় সময়ে ঋণগ্রহীতাদের কিস্তি পরিশোধে বাধ্য করা যাবে না।
গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলাতদিয়াড় মাঝেরপাড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষুদ্রঋণের কিস্তি আদায়ের দিন ছিলো। এসময় কয়েকজন ঋণগ্রহীতা কিস্তির টাকা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে মাঠকর্মী তাদের বলেন, এখন কিস্তির টাকা দিতে না পারলে ভবিষ্যতে সুদের হার বেড়ে যাবে। ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের আর ঋণ দেয়া হবে না। পরে অনেকেই বিভিন্ন মানুষের কাছে থেকে টাকা ধার করে কিস্তি পরিশোধ করেন।
চুয়াডাঙ্গার দৌলাতদিয়াড়ের এক কোচিং সেন্টারের মালিক বলেন, লকডাউন চলাকালীন আমাদের কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়া হয়। গত ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত কোচিং বন্ধ রয়েছে। কিভাবে দিন কাটাচ্ছি একমাত্র আল্লাহ-ই জানেন। এর মধ্যে আবার কিস্তি!
চুয়াডাঙ্গার শহীদ আবুল কাশেম সড়কের মোবাইল যন্ত্রাংশের এক খুচরা ব্যবসায়ী জানান, করোনা পরিস্থিতিতে ব্যবসা বাণিজ্যে অনেকটা ভাটা পড়েছে। এরমধ্যে দোকান ভাড়া দিয়ে কোনোরকমে সংসার চালিয়ে আসছি। এমতাবস্থায় ঋণের কিস্তির টাকার জন্য এনজিওকর্মীরা চাপ প্রয়োগ করছে। এনজিওকর্মীরা জানিয়েছে, এ মাসের মধ্যে কিস্তির টাকা না দিলে পরবর্তী মাসে কিস্তির সাথে অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, যতোদিন পর্যন্ত করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ব্যবসা বাণিজ্য আগের রুপে না আসছে ততোদিন পর্যন্ত ঋণের কিস্তি শিথিল করা হোক।
চুয়াডাঙ্গার দৌলাদয়িাড়ের কোচিং মালিকের অভিযোগের বিষয়ে গ্রামীণ ব্যাংক আলুকদিয়া শাখার কর্মকর্তা ইমদাদুল হক বলেন, সেখানে কোনো গ্রাহকের সাথে কোনো প্রকার ঝামেলা হয়নি। আর ব্যাংক যেহেতু খোলা আছে সেহেতু আমাদের ক্ষুদ্রঋণের কার্যক্রম চলবে। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত চলছে। কিস্তি আদায়ে সরকারি নির্দেশনার ব্যাপারে তিনি বলেন, সরকারি সব নির্দেশনা আমার না জানাও থাকতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহা. সাদিকুর রহমান বলেন, দৌলাতদিয়াড়ের এক শিক্ষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রামীণ ব্যাংকের আলুকদিয়া শাখার ব্যবস্থাপকের সাথে কথা বলা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কোনো গ্রাহককে কিস্তির টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ না করাসহ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম চালাতে বলা হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment