চুয়াডাঙ্গায় দুজন ও মেহেরপুরে দুজনের শরীরে করোনা শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের একজন স্বেচ্ছাসেবক ও ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চুয়াডাঙ্গা শাখার একজন এমসিজি কর্মচারী করোনা পজিটিভ হয়েছেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছেন, যারা অসুস্থ হবেন তাদের অফিস করা থেকে বিরত রাখা হবে। তাদের পরীক্ষা করানো হবে। আত্মবিশ্বাস এতিমখানা পাড়ার শাখাটি লকডাউন করেছে উপজেলা প্রশাসন। করোনা আক্রান্তদের মধ্যে একদিনে রেকর্ড নতুন সুস্থ হয়েছেন ১৮ জন। করোনা পরীক্ষার জন্য নতুন নমুনা প্রেরণ করা হয়েছে ৪৩ জনের। সোমবার রাতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে চুয়াডাঙ্গার ৮টি রিপোর্ট সিভিল সার্জন অফিস কার্যালয়ে আসে। অপরদিকে, মেহেরপুরে একই পরিবারের দুজনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতে কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাব থেকে চুয়াডাঙ্গার ৮টি রিপোর্ট আসে। নতুন রিপোর্টের মধ্যে ২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের একজন স্বেচ্ছাসেবকের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তিনি বর্তমানে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শরীরে করোনার কোনো উপসর্গ নেই। ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড চুয়াডাঙ্গার শাখার এমসিজি পদের একজন কর্মচারী করোনা পজিটিভ হয়েছে। তিনি অসুস্থ শরীরে ব্যাংকে আসতে চাইলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে সদর হাসপাতালে করোনা টেষ্ট করানোর জন্য বলেন। তার শরীরে উপসর্গ ছিলো জ্বর ও গলা ব্যাথা। তিনি রোববার সকালে নমুনা দিয়ে কুষ্টিয়া শহরের গোরস্থানপাড়ার বাড়িতে চলে যান। সোমবার রাতে তার করোনা পজিটিভ আসে।
করোনা আক্রান্তদের মধ্যে রেকর্ড একদিনে নতুন ১৮ জন সুস্থ হয়েছেন। সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে ১০ জন ও হোম আইসোলেশন থেকে ৮ জন ছাড়পত্র পেয়েছেন। চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২৫৮। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৬৫ জন। সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে রয়েছে ১৩ জন ও হোম আইসোলেশনে রয়েছে ৭৫ জন রোগী।
আত্মবিশ্বাস চুয়াডাঙ্গা সদর এতিমখানাপাড়া শাখাটি লকডাউন করা হয়েছে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। এ শাখার তিনজন কর্মী ও একজন রাধুনীর করোনা পজিটিভ হয়েছে। সোমবার সকালে আত্মবিশ্বাসের শাখাটি চিহ্নিত করে লকাউনের স্টিকার লাগানো হয়েছে। আর অফিস কর্তৃপক্ষ নোটিশের মাধ্যমে সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে।
ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলেছে, যারা অসুস্থ থাকবেন তাদের করোনা টেস্ট করানোর জন্য বলা হচ্ছে। অসুস্থ কাউকে অফিসে আসতে দেয়া হচ্ছে না। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামিম কবির বলেন, জরুরি বিভাগের অসুস্থ স্বেচ্ছাসেবককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার সংস্পর্শে আসা অন্যদের নমুনা নেয়া হবে। তাদের দায়িত্ব পালন না করার জন্য বলা হয়েছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান বলেন, এতিমখানাপাড়ার আত্মবিশ্বাস শাখা অফিসটি লকডাউন করা হয়েছে। পাসপোর্ট অফিসের বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। প্রয়োজনে পাসপোর্ট অফিসও লকডাউন করা হবে।
গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মেহেরপুর গাংনীর পশু হাসপাতালপাড়ার দু’জন করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টা পূর্ব ২৪ ঘন্টায় জেলার ২২টি নমুনা পরীক্ষা রির্পোটে এ দু’জন কোভিড-১৯ পজিটিভ বলে সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ৯৪ আর সুস্থতার সংখ্যা ৩৪ জন। আক্রান্ত দু’জন একই পরিবারের। গেল ৩ জুলাই একজন স্বাস্থ্য সহকারী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছিলেন। তার সংস্পর্শে আসা তার মেয়ে ও দেবর আজ পজিটিভ হয়েছেন। তবে আগে থেকেই স্বাস্থ্যকর্মীর দেবরের শারীরিক সমস্যা থাকায় তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম বলেন, ওই স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি আগে থেকে লকডাউন করা আছে। তার সংস্পর্শে আর আসা বেশ কয়েকজনের মধ্যে দু’জন পজিটিভ হয়েছেন। স্বাস্থ্যকর্মী ও তার মেয়ে সুস্থ আছেন। দেবরকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপতালের পাঠানো হয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা ভালো। প্রসঙ্গত, গতকালের দু’জন নিয়ে মেহেরপুর জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪। এর মধ্যে সদরে ৫০, গাংনী ৩৬ আর মুজিবনগরে ৮। মৃত্যু ৫ জন (সদর ২, গাংনী ২ ও মুজিবনগররে ১)। আক্রান্তের মধ্যে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৩৪ জন (সদর ১৮, গাংনী ১৩ ও মুজিবনগরে ৩ জন)। অন্যত্র পাঠানো হয়েছে ৯ জন। (সদর ৫, গাংনী ৪)। ফলে সর্বমোট পজিটিভ রোগীর সংখ্যা বর্তমানে ৪৬ জন (সদর ২৫, গাংনী ১৭ ও মুজিবনগরে ৪) জন।

Comments (0)
Add Comment