স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় ফেনসিডিল রাখার দায়ে ইসরাফিল (৩০) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা অর্থদ-, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদ- দেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (১ম আদালত) মোহাম্মদ আল-আমিন মাতুব্বর এ রায় ঘোষণা করেন। দ-প্রাপ্ত ইসরাফিল চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হরিশচন্দ্রপুর নতুন গ্রামের ওসমান গণির ছেলে। এছাড়া এজাহারে উল্লেখিত একই এলাকার মৃত আকবর আলীর ছেলে ফরজ আলী ও ফকির মোহাম্মদের ছেলে আশরাফুলকে এ মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট দামুড়হুদার উজিরপুর মাদরাসার সামনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দল অভিযান চালায়। ডিবি এসআই মো. আমির আব্বাস ও সঙ্গীয় ফোর্স পুরাপাড়া মোড়ে জনৈক টিপু সুলতানের চায়ের দোকানের সামনে সন্ধ্যা ৭টার দিকে অবস্থান নিয়ে একটি বিচালি বোঝাই আলমসাধুকে সিগন্যাল দেয়া হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিন মাদক পাচারকারীর মধ্যে দুজন পালিয়ে গেলেও চালক ইসরাফিলকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে বিচালির গাদার ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় ১০০ বোতল ফেনসিডিল। ওই সময় আটককৃত ইসরাফিল জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, পলাতক দুই ব্যক্তি ফরজ আলী ও আশরাফুল ইসলাম এই ফেনসিডিলের মালিক। পরবর্তীতে তদন্ত শেষে দামুড়হুদা থানা পুলিশ ১৯৯০ সালের মাদক প্রণা নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধনী (০৪) এর ১৯(১) টেবিলের ৩(খ) ধারায় বিক্রির উদ্দেশ্যে কোডিনযুক্ত মাদকদ্রব্য ফেনডিসিল নিজ দখলে রাখার অপরাধে ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর ইসরাফিলকে ১নং আসামি ও ফরজ আলী এবং আশরাফুলকে পলাতক আসামি হিসেবে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। দীর্ঘদিন মামলাটি চলমান থাকার পর ৬জন সাক্ষীর স্বাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে রোববার আদালত ইসরাফিলকে যাবজ্জীবন কারাদ- দেন।
আসামিরা দীর্ঘদিন ধরে ভারত থেকে ফেনসিডিল এনে অভিনব কৌশলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছিল বলে জানা যায়। উদ্ধারকৃত ফেনসিডিলের আনুমানিক মূল্য ধরা হয় ৬০ হাজার টাকা এবং ব্যবহৃত আলমসাধুর মূল্য ৭০ হাজার টাকা, মোট জব্দ মালামালের মূল্য দাঁড়ায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
মাদক মামলায় এ রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মানজার আলী (এপিপি) বলেন, এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। সমাজে যারা এখনো মাদক বিক্রি করে, তাদের জন্য এটি একটি কঠোর বার্তা। আদালতের এমন রায় মাদক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি মাদক ব্যবসায়ীদের মনে ভয় জাগাবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষও সচেতন হবে।