স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় নারী উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময়, বৃক্ষরোপণ ও স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম এবং এটিএম বুথ উদ্বোধন করা হয়েছে। উদ্বোধন করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক-পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এবং চুয়াডাঙ্গার কৃতি সন্তান মো. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী চুয়াডাঙ্গায় এসব কর্মসূচিতে অংশগ্রহন করেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের মালিক টাওয়ারে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহ জেলার পাঁচটি শাখার শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের নারী উদ্যেক্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন প্রধান অতিথি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং সিইও মো. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে চলতি ও স্থায়ী বিনিয়োগে প্রত্যয়ী হিসাব খোলা এবং বিনিয়োগে উৎসাহীত করতে এ মতবিনিময় করা হয়। এ ব্যাংকে কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি আকৃতির নারী উদ্যেক্তা উৎপাদনশীল শিল্প, সেবা শিল্প, ব্যবসায় উদ্যোগ চলতি মূলধন সরবরাহ এবং স্থায়ী সম্পদ ক্রয়ের জন্য বিনিয়োগে ঋণ নিতে পারবেন। নারী উদ্যেক্তাদের জন্য নুন্যতম ২ বছরের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা, বৈধ ট্রেড লাইসেন্স, ব্যবসায়ের ধরন ও ব্যাংকের প্রয়োজন অনুসারে প্রয়োজনীয় দলিলাদি থাকতে হবে। সর্বোচ্চ পাঁচ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবেন। মেয়দ কাল হবে ১ থেকে ৭ বছর। মুনাফার হার শতকরা ৫ ভাগ। এখাতে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। তৈল – মসলা জাতীয় ফসলে শতকরা ৪ ভাগ সুদে নারীরা ঋণ পেতে পারবেন। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক-পিএলসি’র এজেন্ট ব্যাংকিং নারীরা হতে পারবেন। নারীরা ১০ টাকার হিসাব খুলতে পারবেন। মতবিনিময়সভায় ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংকে যত ঋণ আছে তার শতকরা ৭ ভাগ নারীকে সরকার মনে করছে তাদেরকে ক্ষমতায়ন করা দরকার। তারা ব্যাংকে না যেয়ে এনজিওতে যাচ্ছে। এনজিও শতকরা ২৮/৩০ ভাগ হারে ঋণ আদায় করে। এজন্য ওখান থেকে আর বের হওয়া যাচ্ছে না। যেটি শতকরা ৭ ভাগ নারীদের জন্য সরকার করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সহযোগিতা করছে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক সহযোগিতা করেছে। ব্যবসায় লেগে থাকতে হবে। ব্যাংকের ঋণ নিয়ে ছেড়ে দেবেন না। যত কম নিয়ে চলা যায়। আপনার ব্যাংকে একবার আসবেন। ব্যাংক আপনার কাছে বারবার যাবে।
এসময় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের চুয়াডাঙ্গার শাখার ম্যানেজার চৌধুরী মো. শহিদুল্লাহ স্বাগত বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভায় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের হেড অফিসের কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ খান, রফিকুল ইসলাম, খুলনা জোনাল হেড সাইদুর রহমান, নারায়ণগঞ্জ শাখার ম্যানেজার এস এম রাশেদুল করিম, কুষ্টিয়া শাখার ম্যানেজার সাইদুর রহমান, ঝিনাইদহের কালিগঞ্জ শাখার ম্যানেজার কামরুজ্জামান স্বপন, মহেশপুর শাখার ম্যানেজার মেহেদী হাসান এবং সরোজগঞ্জ উপ-শাখার ম্যানেজার বক্তব্য রাখেন। এসময় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ফলেল শুভেচ্ছায় ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বরণ করে নেয়া হয়। অপরদিকে, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে মিলনায়তনে ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক ও ব্যাংকের গ্রাহকদের নিয়ে বৃক্ষরোপন ও আর্থিক শিক্ষা কর্মসূচী বিষয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আকবর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক-পিএলসির ব্যবস্থপনা পরিচালক ও সিইও মো. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এসময় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম, জোনাল হেড খুলনা সাইদুর রহমান ও নারায়নগঞ্জ শাখার ম্যানেজার এস এম রাশেদুল করিম বক্তব্য রাখেন। এসময় শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উপব্যবস্থাপক আব্দুল হামিদ, সরোজগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলাম, মনিরুল ইসলাম ও মো. মোস্তফাসহ অন্যান্য গ্রাহকরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর সরোজগঞ্জ বাজারে অবস্থিত শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের উপ-শাখার এটিএম বুথ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি মো. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় ফুল দিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে শুভেচ্ছা জানানো হয়।
সভায় প্রধান অতিথি শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরোজগঞ্জ উপশাখা এক বছর চালু হয়েছে। সবাই ব্যাংকের সাথে ব্যাংকিং করবো। দেশে ১০টি নিরাপদ থাকবে। তার মধ্যে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক আছে। সরোজগঞ্জ উপ-শাখায় এটিএম বুথ চালু করা হলো । শিক্ষার্থীদের জন্য ক্রেডিট কার্ডে কোন খরচ লাগবে না। অ্যাপসের মাধ্যমে এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংক, বিকাশ ও নগদ এবং গ্যাস ও ইলেকট্রিক বিল প্রদান করা যাবে। সেটাও ফ্রি । চলতি মরসুমে শাহজালাল ব্যাংক এ বিদ্যালয়ে ৫০০ গাছের চারা বিতরণ করা হলো। চলতি মৌসুমে ৫০ হাজার চারা রোপন করার পরিকল্পনা রয়েছে ব্যাংকের। একটি গাছ মানুষকে সাবলম্বি করে দেবে। ছাত্ররা আগামী দিনের জাতির ভবিষৎ। বেসিক ডিসিপ্লিন তোমাদের মনের মধ্যে গেথে দিতে হবে। আমরা কখনো নিজেরা ছোট হবোনা, পিছপা হবো না। তৈলবীজ, মসল্লা, গম ও ভূট্রা কৃষিজাত ফসলে শতকরা ৪ ভাগ হারে ঋণ পাওয়া যায়। ওই ফসলটা হতে ৬ মাস সময় লাগে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ব্যাংকের সেকা গ্রহন করবেন।