স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও তৃণমূলের জনপ্রিয় নেতা মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর আত্মার মাগফিরাত কামনায় জেলা বিএনপি ও পরিবারের উদ্যেগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বাদ আসর চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের অন্তর্গত ২১টি ইউনিয়নে জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ মাহফিলে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী, কৃষক, শিক্ষক, ছাত্রসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এরআগে জুম্মার নামাজের পর পৌর শহরের সাতটি মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে প্রয়াত এই নেতার পরিবারবর্গ। দোয়া ও মিলাদ শেষে মির্জা শিপলুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।
জেলা বিএনপির উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় সদর উপজেলার ৬টি এবং আলমডাঙ্গা উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়সহ স্থানীয় স্কুল প্রাঙ্গণেও এই আয়োজনে নেতাকর্মীরা স্মরণ করেন প্রয়াত এ নেতার নিবেদন, সততা ও দলপ্রেম। দলীয় নেতাকর্মীরা তাঁরা বলেন, ‘মির্জা শিপলু ছিলেন তৃণমূল রাজনীতির অকৃত্রিম বন্ধু, যিনি নিজের চেয়ে সংগঠনকে বড় ভাবতেন।’
মির্জা শিপলু পরিবারের পক্ষ থেকে চুয়াডাঙ্গা শহরের জান্নাতুল মওলা জামে মসজিদ, বড়বাজার জামে মসজিদ, ভি.জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় জামে মসজিদ, থানা জামে মসজিদ, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ, কোর্ট জামে মসজিদ ও গুলশানপাড়া জোল মসজিদে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শহরের বিশিষ্টজন ও আত্মীয়স্বজনরা এসকল দোয়া অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
ভি.জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় জামে মসজিদে মির্জা শিপলুর আত্মার শান্তি কামনায় অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ। এসময় চুয়াডাঙ্গা-১ সংসদীয় আসনের ২১ ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মির্জা শিপলু আমাদের রাজনীতিতে একটি মূল্যবোধের নাম। তাঁর মতো সংগঠক আজকের প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা। চুয়াডাঙ্গা বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী তাঁর অসমাপ্ত কাজ এগিয়ে নেবে, এটাই হবে তাঁর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।’
বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির ঘোষিত এই কর্মসূচি সফল করে আলমডাঙ্গা পৌর, উপজেলার জেহেলা, গাংনী, বাড়াদী, ভাংবাড়িয়া, চিতলা, খাদিমপুর ইউনিয়ন ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর, আলুকদিয়া ইউনিয়নসহ স্ব স্ব ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সদ্য প্রয়াত মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও তাঁর রাজনৈতিক কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনা করা হয়।
পরিবারের পক্ষ থেকে শহরে সাতটি সমজিদে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে অংশ নেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। জান্নাতুল মওলা কবরস্থান জামে মসজিদে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গায় জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, কোট জামে মসজিদে উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গায় জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, বায়তুল মামুর জামে মসজিদে উপস্থিত ছিলেন জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব সেলিম, ভি.জে স্কুল জামে মসজিদে উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিন।
আলমডাঙ্গা উপজেলা ও পৌর বিএনপির কার্জলয়সহ প্রতিটি ইউনিয়ন বিএনপির কার্জলয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রোকন, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ও বাড়াদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তোবারক হোসেন, জেহেলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবিদুজ্জা মিল্টন, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন খান আলা, গাংনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান রেজু, সাধারণ সম্পাদক আইনাল, খাদিমপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শেরেগুল ইসলাম বিশ্বাস, বাড়াদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বকুল, সাধারণ সম্পাদক শুকুর আলী, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন লাড্ডু, ভাংবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি টিপু সুলতান, চিৎলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজিব ফেরদৌস হাসান পাপেন, সাধারণ সম্পাদক মহাসিন আলী, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান শেখন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ছালাম, আলুকদিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জহুরুল ইসলামসহ উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও জাসাসসহ বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
বিএনপি পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দোয়া ও সৎকর্মই মানুষকে জীবন্ত রাখে। শিপলু ভাই ছিলেন মানুষ ও দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ। একযোগে সকল ইউনয়নে অনুষ্ঠিত এই দোয়া মাহফিল তাঁর প্রতি দলের ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ।
উল্লেখ্য, গত রোববার ঢাকার ধানমণ্ডিতে মেজো ভাইয়ের বাসায় স্ট্রোকে মারা যান চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। ওইদিন ঢাকায় প্রথম জানাজা শেষে পরদিন সকালে চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। শিপলুর মৃত্যুর পর চুয়াডাঙ্গার রাজনৈতিক অঙ্গনে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, তা পূরণ করা সহজ নয়, এমন মন্তব্য করেন জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতারা। তাঁরা বলেন, ‘তিনি ছিলেন দলের নীরব কর্মী, কিন্তু কার্যকর সংগঠক। তাঁর অনুপস্থিতিতে চুয়াডাঙ্গা বিএনপি এক নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে হারাল।