চেয়ারম্যান পদে ৩ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা : লড়াই হবে দ্বিমুখি

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার ৪ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ নভেম্বর। এবারের নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। আ.লীগের ফাঁকা মাঠ থাকলেও ঘরের শত্রু বিবিসনে পরিণত হয়েছে। নির্বাচনের মাঠে আ.লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আ.লীগ। কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচারণায় মাঠে রয়েছে প্রার্থীরা। চেয়ারম্যান পদে ৪জন প্রার্থীর প্রচারণা অব্যাহত থাকলেও অবশেষে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সহিদুল হক। সহিদুল হক সরে দাঁড়ালেও মাঠ ছাড়েননি অপর বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল করিম। দামুড়হুদার ৪ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন তফশিল ঘোষণার পর থেকেই নির্বাচন পাগল মানুষগুলো মধ্যে বইতে শুরু করেছে উৎসবের আমেজ। মাঠ গরম করে রেখে প্রার্থী, ভোটার ও সমর্থকরা। প্রার্থীদের মুখ থেকে যেমন ঝড়ছে প্রতিশ্রুতির বুলি, তেমনি নানামুখি কৌশলেও কমতি রাখেননি কেউ। ইউনিয়নের হাট-বাজার থেকে শুরু করে গ্রামের অলি-গলিতে পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে ফেলা হয়েছে। ইউনিয়ন এলাকার হাট-বাজার, ক্লাব, চায়ের দোকান, হোটেল ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে নির্বাচনী আলোচনায় মুখরিত। বেশ জোরোসোরে শুরু হয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা। ১৭টি গ্রামের পাশাপাশি খ্রিষ্টান পল্লী নিয়ে গঠিত কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৩৬ হাজার ৯১৬ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৮ হাজার ৭৪৪ ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ১৭২ জন। এবারের ভোটে বিএনপি অংশ না নেয়ায় ওই দলের কোনো প্রার্থীই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে না। ফলে আ.লীগ দলীয়ভাবে বর্তমান চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্টোকে মনোনয়ন দিয়েছে। দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আ.লীগ নেতা আব্দুল করিম ও সহিদুল হক। গত ২৬ অক্টোবর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন থাকলেও আ.লীগের বিদ্রোহী কোন প্রার্থী সেদিন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেননি। অবশেষে গত পরশু মঙ্গলবার নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন সহিদুল হক (চশমা)। এদিকে নির্বাচনের মাঠ চষছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনীত প্রার্থী আব্দুল কাদির। তিনি দলের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দলীয় প্রতীক হাতপাখার ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আ.লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভূট্টো (নৌকা) প্রতীকে দলের নেতাকর্মীদের একাংশ সাথে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন বেশ জোরেসোরে। চলমান চেয়ারম্যান ও দলীয় টিকিটের কারণে দলের একটি পক্ষ তাকে সমর্থন করলেও অন্য একটি পক্ষ বেঁকে রয়েছেন এখনো। আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল করিমের (আনারস) প্রতীক নিয়ে লাফাঝাপা করছে দলের অপর অংশের নেতাকর্মীরা। প্রচার-প্রচারণায় অংশ না নিলেও অনেকেই নিরব প্রচারণাও চালাচ্ছে। আব্দুল করিম যদিও স্বতন্ত্র প্রার্থী, তবুও তার প্রচারণায় দেখা যাচ্ছে আ.লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরও। খলিলুর রহমান ভুট্টো যেমন দলের সমর্থনে নিজের অবস্থান মজবুত করে ফুরফুরে মেজাজে প্রচারণা চালাচ্ছেন, তেমনি দল ও দলের বাইরের ভোটারদের সমর্থন পেয়ে নিজেকে পোক্ত প্রার্থীই মনে করছেন আব্দুল করিম। তবে সহিদুল হক নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেও তিনি এখনো পর্যন্ত কোন প্রার্থীকে সমর্থন দেননি। ইউনিয়নবাসীর ধারণা সহিদুল হকের সমর্থন প্রভাব ফেলতে পারে হার-জিতের ব্যাপারে। আসলে কি সহিদুল হক কোন প্রার্থীকে সমর্থন করবেন কিনা তা এখনো পরিষ্কার জানা যায়নি। এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর পাশাপাশি বসে নেই সংরক্ষিত ৩ আসনের মহিলা সদস্য ও ৯ ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য প্রার্থীরাও। তারাও সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। চাচ্ছেন, দোয়া, সমর্থন ও ভোট। কারো সাথে কেউ কুশল বিনিময় করতেও করছেন না ভুল। কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৩টি ওয়ার্ডে মহিলা সদস্য প্রার্থীর সংখ্যা ১৮ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন, ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ড রহিমা বেগম (হেলিকপ্টার), নাজমা খাতুন (বক), আনেহার খাতুন (তালগাছ), রহিমা খাতুন (সূর্যমুখী ফুল), নার্গিস খাতুন (কলম), সুফিয়া বিবি (ক্যামেরা)। ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড আলেয়া খাতুন (বই) ঝর্ণা খাতুন (জিরাপ), দেলোয়ারা খাতুন (তালগাছ), রওশনারা বেগম (মাইক), ফেরদৌস খাতুন (বক), রোকেয়া বেগম (হেলিকাপ্টার)। ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ড ফুলজান খাতুন (সূর্যমুখী ফুল), ফিরাজা খাতুন (মাইক), ইয়াসমিন খাতুন (হেলিকপ্টার), সুমিয়া খাতুন (বই) ও লালবানু (তালগাছ) প্রতীকে। ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মধ্যে ভোটযুদ্ধে রয়েছেন ৪৬ জন প্রার্থী। ১নং ওয়ার্ডে ৮ প্রার্থীর মধ্যে আব্দুল হাকিম (ভ্যানগাড়ি), আনারুল ইসলাম (মোরগ), আলমগীর হোসেন (টিউবওয়েল), সালাউদ্দিন (ফুটবল), জহির উদ্দিন (ঘুড়ি), মো. শাহাজুল (আপেল), ইশু ম-ল (তালা), রবিন কাটানি (লাটিম)। ২নং ওয়ার্ডে মুকুল মোল্লা (তালা), নোয়াজ্জেস মালিতা (ফুটবল) আফজাজুল হক (মোরগ) বিল্লাল হোসেন (টিউবওয়েল)। ৩নং ওয়ার্ডে সিরাজুল ইসলাম (মোরগ), মেহেদী হাসান (ফুটবল), মনজুর আহমেদ (টিউবওয়েল), সাব্বির হাসান (তালা)। ৪নং ওয়ার্ডে ইউনুছ আলী (ভ্যানগাড়ি), স্বপন ম-ল (টিউবওয়েল), নোয়াজ্জেম (বৈদ্যুতিক (পাখা), হেলাল হোসেন (ফুটবল), মনিরুজ্জামান (মোরগ), নাজমুল হক (আপেল), আয়ুব হোসেন (তালা),। ৫নং ওয়ার্ডে আব্দুর রশিদ (টিউবওয়েল), হুমায়ন কবির (তালা), অলিউজ্জামান (মোরগ), আব্দুর রাজ্জাক (ফুটবল)। ৬নং ওয়ার্ডে জাহাঙ্গীর আলম (ভ্যানগাড়ি), আব্দুর জব্বার (মোরগ), বিল্লাল হোসেন (তালা), আজাগর আলী (বৈদ্যুতিক পাখা), মাহবুর রহমান (আপেল), ছানোয়ার হোসেন (ফুটবল), জিয়াউর রহমান (টিউবওয়েল)। ৭নং ওয়ার্ডে ছালাম (ফুটবল), ছানোয়ার হোসেন (টউবওয়েল), সাইদুর রহমান (মোরগ)। ৮নং ওয়ার্ডে নুর মোহাম্মদ (টিউবওয়েল), হাশেম বিশ্বাস (তালা), রহিদুল ইসলাম (মোরগ), ফারুক আলী (ফুটবল), রফিকুল ইসলাম (ভ্যানগাড়ি), সেলিম উদ্দিন (আপেল), ইউনুছ আলী (বৈদ্যুতিক পাখা)। ৯নং ওয়ার্ডে সবুর আলী (মোরগ) এবং সাজিবর রহমান (টিউবওয়েল) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Comments (0)
Add Comment