চোরাই মুরগীর বাচ্চা কেনার অভিযোগে ঝিনাইদহের ৩ ব্যবসায়ী আটক

নাটোর থেকে মুরগীর বাচ্চা ট্রাকযোগে আলমডাঙ্গায় এসে পালিয়ে গেলেন কালীগঞ্জের আলামিন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: নাটোরের আসুয়াদ হ্যাচারি থেকে ৪ হাজার ৭শ পিস মুরগীর বাচ্চা আলমডাঙ্গায় এনে টাকা না দিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যান কালীগঞ্জের প্রতারক আলামিন। এ ঘটনায় আলমডাঙ্গা থানায় অভিযোগ দিলে চোরাই মুরগীর বাচ্চা কেনার দায়ে ঝিনাইদাহ এলাকার তিন পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। পরে বাদিপক্ষের অনাপত্তি থাকায় আটক তিনজনকে  ছেড়ে দেয়া হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে আলমডাঙ্গা রেলস্টেশন এলাকা থেকে ওই মুরগীর বাচ্চা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

নাটোরের আসুয়াদ হ্যাচারীর স্বত্বাধিকারী জান্নাতুল হাসান জানান, বেশ কিছুদিন থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে শাহীন নামের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী ০১৮১৯৯৩৫৭৬৪ এবং ০১৯০৯২০৩৫০০ নাম্বার থেকে রিং করে মুরগীর বাচ্চা ক্রয়ের প্রস্তাব দেয়। এর আগে দামদরে বনাবনি না হওয়ায় বাচ্চা দেয়া যায়নি। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি বুধবার শাহীন ৪ হাজার ৭শ বাচ্চার অর্ডার  দেয়। ১ লাখ ৭৮ হাজার ৫শ টাকার মধ্যে ওইদিনই শাহীন বিকাশের মাধ্যমে ৮ হাজার ৫শ টাকা পাঠিয়ে দেন। এরপর বৃহস্পতিবারে নাটোর থেকে আসুয়াদ হ্যাচারির ম্যানেজার বাবু ৪ হাজার ৭শ বাচ্চা নিয়ে ট্রাকযোগে আলমডাঙ্গার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ট্রাকটি দুপুরে আলমডাঙ্গা স্টেশন এলাকায় পৌঁছে। এ সময় শাহীনও ট্রাকের কাছে উপস্থিত হন। শাহীন কৌশলে মুরগীর বাচ্চা অটোতে তুলে বাকি টাকা দেয়ার নাম করে পাশের একটি চায়ের দোকানে নিয়ে যায় ম্যানেজার বাবুকে। এই ফাঁকে অটোটি স্টেশন এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বাবু অটোর পেছনে পেছনে দৌঁড়াতে থাকলে শাহীনও পালিয়ে যায়। সব হারানোর পরে ম্যানেজার বাবু আলমডাঙ্গা থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ শাহীনের মোবাইল নাম্বার ট্র্যাকিঙ করে জানতে পারে প্রতারকের নাম শাহীন না, তার নাম আলামিন। তার বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে।

পুলিশ আরও জানতে পারে আলামিন নাটোর ও বগুড়া এলাকা থেকে প্রতারণার মাধ্যমে মুরগীর বাচ্চা এনে আটক ঝিনাইদহের তিন পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ীর নিকট মার্কেটিং ম্যানেজার কবীর হোসেনের মাধ্যমে বিক্রি করেন। ঝিনাইদাহ শহরের ফিড ব্যবসায়ী মশিউর, হলিধানীর শাজাহান ও শৈলকুপার সাবির দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাই করা মুরগীর বাচ্চা ক্রয় করে আসছেন।

আলমডাঙ্গা থানা পুলিশ ঝিনাইদাহ থেকে ওই তিন ব্যবসায়ীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসার সংবাদ পেয়ে নাটোর থেকে ছুটে আসেন জান্নাতুল জামান। গতকাল রাতে তার সাথে কথা হয় এ প্রতিনিধির। তিনি জানান, আলামিনের নেতৃত্বে মুরগীর বাচ্চা ছিনতাইয়ের একটি বড় সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। ঈশ্বরদী থেকে চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদাহ পর্যন্ত এই সিন্ডিকেট বিস্তৃত। তিনি জানান, এর আগে বগুড়ার সাঈদ হোসেনের এআর হ্যাচারি ও তৈয়ব আলীর টিআর হ্যাচারি থেকে প্রতারণা করে বাচ্চা নিয়ে আসে আলামিন।

আপস-মিমাংসা করে আটক ঝিনাইদহের মশিউর, হলিধানীর শাজাহান ও শৈলকুপার সাবিরকে ছেড়ে দেয়া প্রসঙ্গে জান্নাতুল জামান বলেন, আমার বাকি ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা তারা দিয়ে দিলে আপসে আপত্তি নেই। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আটক তিন ব্যবসায়ী জান্নাতুলের দাবিকৃত টাকা দেয়ার শর্তে থানা থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

Comments (0)
Add Comment