ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে মাদরাসা সুপার অবরুদ্ধ

গাংনীতে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে ছাত্রীদের কুপ্রস্তাব দেয়ার অভিযোগ

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীর করমদী দারুচ্ছুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসা সুপার আবু জাফরের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানীর অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার সকালে স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকগণ মাদরাসা সুপারের গ্রেফতার বহিষ্কার ও বিচারের দাবিতে মাদরাসা ঘোরাও করে সুপারকে একটি রুমে অবরুদ্ধ করে। সংবাদ পেয়ে গাংনী থানা পুলিশ মাদরাসার সুপার আবু জাফরকে তালা ভেঙে উদ্ধার করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও অভিভাবকরা জানান, গত বৃহস্পতিবার মাদরাসা সুপার আবু জাফর নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তার রুমে ডেকে নেয় এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার সহপাঠী ও অভিভাবকদের জানালে সকলেই ফুঁসে উঠে। তারা গতকাল রোববার সকালে মাদরাসা ঘেরাও করে এবং সুপার আবু জাফরকে একটি কক্ষে তালা বদ্ধ করে রাখে। তারা অধ্যক্ষকে বহিষ্কার গ্রেফতার ও বিচারের দাবি তোলেন। খবর পেয়ে গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে তালাভেঙে মাদরাসা সুপারকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, দীর্ঘদিন যাবত মাদরাসা সুপার আবু জাফর তাদের কাছে মোবাইল নম্বর চান এবং গোপন কথা বলে কু-প্রস্তাব দেন। মান সম্মানের ভয়ে কেউ মুখ খোলে না। গত বৃহস্পতিবার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিজ রুমে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে। সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত তারা মাদরাসাতে আসবেন না বলেও জানান।

করমদি গ্রামের সাইদুর রহমান জানান, সুপার আবু জাফর চরিত্রহীন। সে ছাত্রীদের কাছে গোপন কথা বলার জন্য মোবাইল নম্বর চান এবং কুপ্রস্তাব দেন। ইতোপুর্বে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে তাকে জুতার মালা পরিয়ে মাদরাসা চত্বর ঘোরানো হয়। তার পর ক্ষমা চাওয়ায় তাকে মাদরাসাতে আসার সুযোগ দেয় কর্তৃপক্ষ। এবার আর কোন সুযোগ দেয়া হবে না। একই কথা জানিয়েছেন অন্যান্য অভিভাবকরা। করমদি গ্রামের সাবেক মেম্বার সিরাজুল ইসলাম জানান, ঘটনার শিকার ওই ছাত্রির অভিভাবকের মোবাইল ফোনের সংবাদ পান। ছাত্রীর ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শোনার পর অন্যান্য অভিভাবকদের জানানো হয়। পরে মাদরাসাতে আসলে সুপার আবু জাফর ঘটনাটি অস্বিকার করেন। এতে অন্যান্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ফুঁসে উঠে মাদরাসা ঘেরাও করে সুপারকে তালাবদ্ধ করে রাখে।

মাদরাসা সুপার আবু জাফর জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সব মিথ্যা ও সাজানো নাটক। তাকে অপসারণের জন্য স্থানীয় লোকজন পরিকল্পিতভাবে অভিযোগ করছেন। করমদি দারুচ্ছুন্নাহ নেছারিয়া দাখিল মাদরাসার সভাপতি গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি খাতুন জানান, ওই শিক্ষার্থীর লিখিত অভিযোগ এবং কয়েকটি ভিডিও ক্লিপ পেয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন বলেও জানান তিনি।

Comments (0)
Add Comment