দর্শনায় একের পর এক ঘটছে ব্যাটারি চালিত ভ্যান চুরির ঘটনা

দর্শনা অফিস: যতোই দিন যাচ্ছে, ততই লাগছে আধুনিকতার ছোয়া। ডিজিটাল বাংলাদেশে পাল্লা দিয়ে যেন সবক্ষেত্রে আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বছর কয়েক আগেও পা-চালিত (প্যাডেল) ভ্যান-রিকসা চলাচল করলেও অল্প দিনে তা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন সর্বত্র ব্যাটারি চালিত ভ্যান-রিকসা চলাচল করছে। পা চালিত ভ্যান-রিকসা চালানো কষ্টকর ছিলো, কিন্তু ব্যাটারি চালিত রিকসা-ভ্যান কষ্ট লাঘব হওয়ায় বেড়েছে চালকের সংখ্যা। ফলে বর্তমান দর্শনাসহ আশপাশ গ্রামঞ্চালে ব্যাটারী চালিত ভ্যান সংখ্যা প্রচুর। ফলে অনেকেই খুঁজে পেয়েছে জীবিকা নির্বাহের উপায়। হঠাৎ করেই দর্শনায় ব্যাটারিচালিত ভ্যান চুরির যেন হিড়িক পড়ে গেছে। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে দর্শনাসহ আশপাশ এলাকা থেকে একডজন ভ্যান চুরির ঘটনা ঘটেছে।
জানা গেছে, দর্শনা রেলবাজারের কাচামাল আড়ৎ পট্টি থেকে গত ৫ সেপ্টেম্বর চুরি হয়েছে দর্শনার ইসমাইল হোসেনের ছেলে সুমনের ভ্যান। ভ্যান চালক ছিলেন সুলতানপুরের কাজল। ১৬ সেপ্টেম্বর রামনগর মোড় থেকে চুরি হয় সাড়াবাড়িয়া মাঠপাড়ার রিপনের ভ্যান। এরই মধ্যে রেলবাজারের কাচামাল আড়ৎপট্টি থেকে চুরি হয়েছে দক্ষিণচাঁদপুর স্কুলপাড়ার এজের ম-লের ছেলে কাশেমের ভ্যান। যে ভ্যান চালক ছিলেন, দর্শনা বাসস্ট্যান্ডপাড়ার আ-ুল হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম। একই স্থান থেকে চুরি হয়েছে দোস্তগ্রাম মসজিদপাড়ার আ.গণির ছেলে শাহজালাল ও একইপাড়ার আমতলাপাড়ার শাহবুদ্দিনের ছেলে আক্তারের ভ্যান। এছাড়া পরাণপুর কলোনিপাড়ার নাসির উদ্দিনের ছেলে কুরবানের ভ্যান চুরি হয়েছে। এ ভ্যানটির চালক ছিলেন শ্যামপুর জোড়া বটতলার জাফরের ছেলে সবুজ। চলতি মাসের ১১ তারিখে ভ্যান চুরি হয়েছে আকন্দবাড়িয়া নতুনপাড়ার মিজানুর রহমানের ছেলে মতিয়ার রহমানের। ভ্যানটি চালাচ্ছিলেন উজলপুর উঠতিপাড়ার আমির হোসেনের ছেলে মিঠু। মোবারকপাড়ার আলাউদ্দিনের ছেলে নাসিরের ভ্যান চুরি হয়েছে, যে ভ্যানটি চালাতেন রিফুজি কলোনীর জাহাঙ্গীর। মোহাম্মদপুরের অহিদুল ইসলামের ছেলে কবিরের ভ্যান চুরি হয়েছে রেল বাজার থেকেই। ভ্যানটি চালনা করতেন হঠাৎপাড়ার সাব্দারের ছেলে ফজলু। আরো ভ্যান চুরি হয়েছে বড়দুধপাতিলা গ্রামের ডন নামের এক ব্যাক্তির। এ ছাড়া রামনগর দাসপাড়ার আরিফুল ইসলামের ভ্যানটিও চুরি হয়েছে। অনেকেই বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋন নিয়ে, স্ত্রী-মেয়ের গয়না, গরু-ছাগল বা সংসারের প্রয়োজনীয় মালামাল বিক্রি করেও কেউ কেউ ভ্যান কিনে জীবিকা নির্বাহের পথ বেছে নেয়। পা চালিত ভ্যানের খুব একটা মূল্য না থাকায় সে সময় এভাবে চুরির ঘটনা শোনা গেছে খুবই কম। একটি ব্যাটারী চালিত ভ্যানের মূল্য ৩৫-৪০ হাজার টাকা। ফলে হঠাৎ করেই ভ্যান চুরির যেন হিড়িক পড়ে গেছে। এ দিকে ভ্যান হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেকেই। বন্ধ হয়েছে জীবিকা নির্বাহের অবলম্বন। পরিবার-পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে বলেও জানিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এ ব্যাপারে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জের সুদৃষ্টি কামনা করেছে ভ্যান-রিকসা চালকেরা।

Comments (0)
Add Comment