দামুড়হুদার কানাইডাঙ্গার শিশু ইয়ামিনের হত্যাকারী জাহিদের ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কানাইডাঙ্গা গ্রামের শিশু ইয়ামিন হাসান হত্যা মামলার প্রধান আসামি খুনি জাহিদের ফাঁসিসহ মামলার অন্যান্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন শেষে মানববন্ধন করা হয়েছে। রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দামুড়হুদা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত শিশু ছাত্র ইয়ামিনের মা রিনা খাতুন। পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে আমার ছেলে শিশু ছাত্র ইয়ামিন (৮) ও একই গ্রামের প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে শিশু জুনাইদ হাসান (৭) প্রতিদিনের ন্যায় একসাথে খেলা করছিলো। এ সময় একই গ্রামের আসাদুল মেম্বারের ছেলে জাহিদ (১৯) শিশু ইয়ামিনের হাতে ২০ টাকা দিয়ে সিগারেট কিনতে দোকানে পাঠায়। শিশু ইয়ামিন ও জুনাইদ পার্শ্ববর্তী খোরশেদ আলীর দোকানে গিয়ে সিগারেট চাইলে সিগারেট নেই বলে জানায় দোকানি খোরশেদ আলী। এ সময় তাদের কাছে থাকা ২০ টাকার মধ্যে ২ টাকা মূল্যের ৪ প্যাকেট জি-বিস্কুট কেনে এবং জুনাইদ ও ইয়ামিন ৫ টাকা করে ভাগ করে নেয়। ওই ৪ প্যাকেট জি-বিস্কুট কিনে বাড়ি চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পর তারা দুজনেই জি-বিস্কুট হাতে আমবাগানে যায়। এ সময় জাহিদ সিগারেট চাইলে সিগারেট পাওয়া যায়নি বলে জানায় শিশু ইয়ামিন। সিগারেট না পেয়ে জাহিদ তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং টাকা ফেরত চায়। টাকা খরচ করে ফেলেছি বলে জানালে জাহিদ গালাগালি শুরু করে এবং শিশু ইয়ামিনকে বেঁধে মারধর শুরু করে। মারধরের এক পর্যায়ে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ধারালো হেঁসো দিয়ে জবাই করে হত্যা করে। হত্যা শেষে মরদেহ ওই আমবাগানের মধ্যে একটি পাঁকা কবরের মধ্যে ফেলে রাখে। এ সময় শিশু ইয়ামিনের সাথে থাকা জুনাইদ পালিয়ে এসে আমাকে জানায়। এ সময় আমি পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে ছুটতে ছুটতে ঘটনাস্থলে যায় এবং আম বাগানের চারদিক খুঁজতে থাকি। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে শিশু ইয়ামিনকে পাকা কবরের মধ্যে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পায়। এর কিছুক্ষণ পর ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে থাকা খুনি জাহিদকে আমরা জাপটে ধরে ফেলি। কিন্ত জাহিদের পরিবারের লোকজন আমাদেরকে মারধর করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। শিশু ইয়ামিন হত্যাকারী খুনি জাহিদের বয়স কমপক্ষে ১৯ বছর। আমরা জানতে পেরেছি, পুলিশ তার বয়স কম দেখিয়ে তাকে যশোর সংশোধনাগারে পাঠিয়েছে। এছাড়া মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে জুনাইদকে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার প্রকৃত কারণ উম্মোচন হবে। আপনাদের মাধ্যমে আমি বলতে চাই, খুনি জাহিদের বয়স প্রমাণের জন্য তার ডিএনএ টেস্ট করানো হোক এবং মামলার প্রত্যক্ষ সাক্ষী প্রতিবেশী রবিউল ইসলামের ছেলে জুনাইদকে সাংবাদিকদের সামনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। মামলার প্রধান আসামি খুনি জাহিদের ফাঁসিসহ মামলার অন্যান্য আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি এবং আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করছি। সংবাদ সম্মেলন শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন উপস্থিত ছিলেন নিহত শিশু ইয়ামিনের পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসী।

Comments (0)
Add Comment