দামুড়হুদার নাস্তিপুরে তৃতীয় লিঙ্গের একজনের মৃত্যু : করোনা গুজবে লাশ দাফনে গ্রামবাসীর বাধা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় তৃতীয় লিঙ্গের একজনের মৃত্যু নিয়ে করোনা ভাইরাসের উপসর্গের গুজব ছড়ানো হয়েছে। লাশ দাফনে গ্রামবাসীর বাধার মুখে পড়লে পুলিশের হস্তক্ষেপে দাফন সম্পন্ন হয়। গতকাল শনিবার রাতে দামুড়হুদা উপজেলার নাস্তিপুর গ্রামে দাফনকার্য সম্পন্ন করা হয়। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বলেন, তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। করোনার কোন উপসর্গ তার মধ্যে ছিলো না। মৃত আক্তারুজ্জামান দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের নাস্তিপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে ও বর্তমানে তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য।
জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টার দিকে নাস্তিপুর গ্রামের আক্তারুজ্জামান অসুস্থ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি পেটে ব্যথা ও বমি নিয়ে হাসপাতালে যান। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় শনিবার বিকেলে মারা যান। মারা যাওয়ার পর স্বজনরা লাশ নিজ গ্রাম নাস্তিপুর নিয়ে যায়। করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন বলে গ্রামবাসী দাবি করে। তারা গ্রামে লাশ দাফনে বাধা দেয়। বেশ কিছু সময় লাশ দাফন নিয়ে বাধার মুখে পড়তে হয়। পরে দর্শনা থানা পুলিশ নাস্তিপুর গ্রামে উপস্থিত হন। সেখানে গ্রামবাসী পুলিশকে বলেন আক্তারুজ্জামান করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। তাই লাশ অন্যত্র দাফন করতে হবে। পুলিশ সদস্যরা গ্রামবাসীকে বলেন, তিনি করোনা আক্রান্ত বা উপসর্গ নিয়ে মারা যায়নি। কেউ বিষয়টি গুজব ছড়িয়েছে। পুলিশের উপস্থিতিতে লাশের দাফন করা হয় গ্রামের কবর স্থানে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শামিম কবির জানান, তাকে আমি সকালে নিজে দেখে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছি। তার করোনার কোন উপসর্গ ছিলো না। পেটে ব্যথা আর বমি ছিলো। কেউ আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য এমনটি করেছে। তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া আলম বলেন, গ্রামের লোকজন আমাকে জানায় আক্তারুজ্জামান করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি করোনার কোন উপসর্গ তার মধ্যে ছিলো না। অন্য শারীরিক সমস্য ছিলো। লাশ দাফন করা হয়েছে। সে তৃতীয় লিঙ্গের হওয়ায় বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে বেড়াতো।

Comments (0)
Add Comment