দামুড়হুদার বিভিন্ন মাঠে করোনা মহামারী উপেক্ষা করে চলছে রমরমা জুয়ার আসর

দামুড়হুদা অফিস: বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনা ভাইরাসকে উপেক্ষা করেই দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে চলছে রমরমা জুয়ার আসর। এ জুয়ার আসরের প্রধান ভূমিকায় রয়েছে চুয়াডাঙ্গা সদরের সিঅ্যান্ডবিপাড়ার খোকন ও দামুড়হুদার ডুগডুগি গ্রামের তেতুল শেখ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সিঅ্যান্ডবিপাড়ার খোকন ও দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ডুগডুগি গ্রামের তেতুল শেখ মহামারী করোনা ভাইরাসকে উপেক্ষা করে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও যশোর জেলা থেকে জুয়াড়িদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ডুগডুগি বাজারে ডেকে নেন। ডুগডুগি বাজারের মেম্বার মার্কেটের সামনে সান বাঁধানো বটতলায় বসে জুয়া খেলার মাঠ নির্বাচন করা হয়। এরপর ডুগডুগি জুয়াড়িদের জুয়া খেলার মাঠে নিয়ে যাওয়ার জন্যও রয়েছে সিন্ডিকেট নিজেদের মনোনীত কয়েকজন পাখিভ্যান চালক। সেসব পাখিভ্যান চালকদের মাধ্যমে ৪-৬ জন জুয়াড়িকে নিয়ে যাওয়া হয় নির্বাচিত মাঠে। সেখানে তাদের সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্যদের পাহারায় জুয়ার আসর বসানো হয়। এ জুয়ার আসরে লাখ লাখ টাকার খেলা হয়। প্রশাসনের গতিবিধি নিশ্চিত করতে খেলা শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টা আগে থেকেই জয়রামপুর থেকে লোকনাথপুর বাসস্টান্ড পর্যন্ত এ চক্রের একাধিক সদস্য রাস্তায় পাহারায় থাকেন। প্রতিদিনই পরিবর্তন করে খেলার মাঠ। প্রকাশ্যে দিনের আলোতে খোকন তেতুলের নেতৃত্বে চলা জুয়ার আসরকে আরও জমজমাট করতে সেখানে বিক্রি করা হয় মাদকদ্রব্য। খেলতে আসা জুয়াড়িদেরকে ৫-৬টি গ্রুপ করে খেলা খেলানো হয়। প্রতিটি গ্রুপে লাখ লাখ টাকার খেলা খেলানো হয়। দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের তারিনীপুর, ডুগডুগি, দুধপাতিলা, কাদিপুরসহ বিভিন্ন মাঠে দিন বদল করে এ জুয়ার আসর বসে।
নাম প্রকাশে একাধিক জুয়াড়ি জানান, এ জুয়ার আসরে যদি কোনো জুয়াড়ি খেলা করে হেরে যায় তবে তাকে সিন্ডিকেটের লোকজন মোবাইল, স্বর্ণের চেইন ও হাতের আংটি বন্ধক নিয়ে টাকা দেয়। সে টাকাও যদি খেলা করে হেরে যায় তাহলে চড়া সুদে টাকা দেয়।
এ জুয়া চক্রের নেতা খোকনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বললে অকপটে জুয়া খেলানোর কথা শিকার করে বলেন, তেমনভাবে খেলা হচ্ছে না। তবে চুরি করে অল্প অল্প করে খেলানো হচ্ছে।
হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন বলেন, জুয়া খেলার বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি আমার ইউনিয়নে জুয়া খেলা হয় তাহলে খোঁজখবর নিয়ে প্রশাসনকে অবগত করবো।
দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক জানান, দামুড়হুদার হাউলী ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠে জুয়া খেলার আসর বসে। এসব আসরের তথ্য সংগ্রহ করে একাধিকবার পুলিশি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। খোলা মাঠে খেলা করানোর কারণে পুলিশি অভিযান চালালেও বিভিন্ন দিক দিকে জুয়াড়িরা পালিয়ে যায়। এ জুয়াড়িদের আটক করতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Comments (0)
Add Comment