দামুড়হুদার বড়বলদিয়ার শফিকুলের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন : ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা : প্রধান আসামিসহ গ্রেফতার ৪

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার বড়বলদিয়া গ্রামে ভিটে জমির সীমানা দখলদারের লাঠির আঘাতে শফিকুলের মৃত্যু ঘটনায় থানায় ৭ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। দুই নারী ও আবুল কালামসহ এজাহারভুক্ত ৪ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান রয়েছে অব্যাহত। শফিকুলের লাশ ময়নাতদন্ত শেষে করা হয়েছে দাফন সম্পন্ন। গোটা গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। কালাম গংয়ের সকলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছেড়েছে গ্রাম।
জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলার পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের বড়বলদিয়া মাঝপাড়ার আমির হোসেনের ছেলে আবুল কালাম (৪৮) গ্রামের ছামেদ আলীর ঘরজামাতা। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী শুকুর আলীর ছেলে শফিকুল ইসলামের ভিটে বাড়ির সীমানার একাংশ দখল করে রাখে আবুল কালাম। সম্প্রতি জমিজমা মাপজোকের এক পর্যায়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। দখলকৃত জমি আজ নয় কাল ছেড়ে দেয়ার কথা বলে ঘুরাতে থাকে কালাম। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় জমি ছাড়ার কথা বলায় শফিকুলের উপর ক্ষিপ্ত হয় কালাম, সুলতান, ওমিদুলের ছেলে সাগর, মিরাজ, কালামের স্ত্রী মেঘীরন নেছা, মেয়ে শাহনাজ, তাজেরা বেগম ও সুলতানের মেয়ে তানিয়া। শফিকুল কিছু বুঝে উঠার আগেই তেড়ে এসে হামলা চালায় কালাম গং। এক পর্যায়ে শফিকুলকে টেনে হেচড়ে বাড়িতে নিয়ে বেধরক মারধর করে। এরই মধ্যে বাঁশের লাঠি দিয়ে সজোরে মাথায় আঘাত করলে লাঠিতে গেথে থাকা পেরেক মাথায় বিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান শফিকুল। এসময় প্রতিবেশিরা ছুটে এলে পালিয়ে যায় কালাম গং। গ্রামবাসী খবর দেয় পুলিশকে। খবর পেয়ে দ্রুত সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছান দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমান কাজল। ঘটনার পর থেকেই পুলিশি অভিযান শুরু হয়। রাতেই গ্রেফতার করা হয় ওমিদুলের স্ত্রী তাজেরা (৪০)। ওই রাতেই নিহত শফিকুল ইসলামের ছেলে আসাদুজ্জামান শান্ত বাদী হয়ে দর্শনায় থানায় ৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। থানার অফিসার ইনচার্জ মাহব্বুর রহমান কাজলের নেতৃত্বে গতকাল শনিবার মামলার তদন্তকারী অফিসার দর্শনা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শেখ মাহবুবুর রহমান, এএসআই মহিউদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঝটিকা অভিযান শুরু করেন। বিকেলে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয় আমির হোসেনের ছেলে মামলার প্রধান আসামি আবুল কালাম (৫৫), তার স্ত্রী মেহেরন নেছা ওরফে মেঘীরণ (৪৫) ও কুড়–লগাছি ওসমানপুর বেদেপোতা গ্রামের ওমিদুলের ছেলে সাগরকে (২৪)।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতরা পালাচ্ছিলো এলাকা ছেড়ে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে গতকাল সকালে শফিকুলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পুলিশ সদর হাসপাতাল মর্গে নেয়। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে পরিবারের সদস্যদের কাছে দেয়া হয় শফিকুলের লাশ। সন্ধ্যার আগে লাশ গ্রামে আনা হলে স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে বাতাস। সন্ধ্যার পর বড়বলদিয়া গোরস্তানে বেদনা বিধুর পরিবেশে শফিকুলের লাশ দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে ঘটনার পর থেকেই গোটা গ্রামে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ওসি কাজল জানিয়েছেন, শফিকুল হত্যা মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারে ঝটিকা অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

 

Comments (0)
Add Comment