দামুড়হুদার হরিরামপুরে ৪ প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের দীর্ঘ বছর ধরে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন একমাত্র সুস্থ বোন

 

রতন বিশ্বাস : দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের হরিরামপুরে একই পরিবারের পাঁচ সদস্য প্রতিবন্ধী হওয়ার ঘটনা বিরল। জন্মের পর থেকেই বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ৫ ভাইবোনদের ভিতর ১ ভাই মারা গেছে। আর শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ পরিবারের একমাত্র বোনটি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে মাতৃস্নেহে আগলে রেখেছেন প্রতিবন্ধী ৪ ভাইবোনকে। জানাগেছে, হরিরামপুর গ্রামে মসজিদপাড়ার মৃত আবু সদ্দিন বিশ্বাসের ৬ ছেলে মেয়ে। জন্মের পর থেকেই ৩ মেয়ে ও ২ ছেলে মিলে মোট ৫ সন্তান প্রতিবন্ধী। আর ১ মেয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পন্ন সুস্থ। আবু সদ্দিন বিশ্বাস মারা যান ১৯৭৮ সালে। ৫ প্রতিবন্ধী সন্তানদের লালন পালন করেন তাদের মা। এরপর মায়ের একমাত্র সুস্থ মেয়ে বড় হলে মায়ের সাথে ভাইবোনদের সেবা যত্নে অংশ গ্রহন করেন। মাঝপথে মা মারা যাবার পর ৫ ভাইবোনদেরকে মাতৃস্নেহে আগলে রেখে লালন পালন করেন তিনি। প্রতিবন্ধী ৫ ভাইবোনদের ভিতর এক ভাই শহিদুল ইসলাম মারা গেছেন। এবিষয়ে একমাত্র সুস্থ বোন আবেদা খাতুন জানান, আমি আর আমার প্রতিবন্ধী বোন রাশেদা খাতুন (৫৬) জমজ। এরপর একে একে আরো আরো চার ভাইবোন প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মগ্রহন করে। এক ভাই মারা গেছে। আমরা যখন ছোট আমাদের বাবা সেসময় মারা যান। আমার মা প্রতিবন্ধী ৫ ভাইবোনদের নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। মায়ের সাথে আমি তাদের সেবা যত্ন ও দেখাশোনা করি। মা মারা যাবার পরে আমি আমার ভাইবোনদের সন্তানের মত দেখাশোনা করি। তাদের বয়স হয়েছে আর রোগবাগ শরীরে বাসা বেঁধেছে। চলতে ফিরতে পারে না। তারপরেও দেখাশোনা করছি। সরকার প্রতিবন্ধী ভাতা ও তাদের থাকার জন্য ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। তিনি আরো জানান, দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় অনেক বছর আগে আমার ভাইবোনদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন লেখা হয়। আর পেপারে প্রতিবেদন হওয়ার পর তৎকালীন ডিসি স্যার আমাদের বাড়িতে আসেন। মূলত তিনিই ঘর নির্মাণ ও সরকারি সুযোগ সুবিধা করে দেন। এবিষয়ে আওয়ামী লীগনেতা আলাল বিশ্বাস জানান, প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের দীর্ঘ বছর সেবা যত্ন করে চলেছেন একমাত্র সুস্থ বোনটি। সত্যিই প্রশংসার দাবিদার তিনি। পরিবারের লোকজন আগে খুব কষ্ট করেছেন। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ বোনটির স্বামী বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২ ছেলে সরকারি চাকরি করে। আর অন্য ছেলেরা চাষাবাদ ও ব্যবসা করে। প্রতিবন্ধী ভাইবোনদের নিজের সন্তানের মত করে দেখাশোনা করেন তিনি।

Comments (0)
Add Comment