দুর্ঘটনার পর উদ্ধারকারী কয়েকজন লুটপাটে ছিলো ব্যস্ত

চুয়াডাঙ্গার তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় পরিবারগুলোতে শোকের মাতম

স্টাফ রিপোর্টার: ফরিদপুরের মধুখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার তিনজন নিহতের ঘটনায় পরিবারগুলোজুড়ে চলছে শোকের মাতম। কোনোভাবেই যেনো সান্ত¦না খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। আলমডাঙ্গা ব-বিল গ্রামের নিহত বৃদ্ধ মুন্সি মোশারফ হোসেন ও তার বিয়াইন চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের রেলপাড়ার মোমেনা খাতুনকে গত পরশু সন্ধ্যার পর দাফন করা হলেও মুন্সি মোশারফ হোসেনের জামাই আলমডাঙ্গার এনায়েতপুর গ্রামের আসাদুলের লাশ গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে। এদিকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি আহতদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা অভিযোগ করেছেন, দুর্ঘটনার পরপরই আমরা যখন প্রাণ বাঁচাতে চিৎকার করছি, তখন এক শ্রেণির মানুষ আমাদের উদ্ধারের সময় লুটপাটে ব্যস্ত ছিলো।

আলমডাঙ্গার প্রয়াত আব্দুর রাজ্জাক ও চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আছিয়া খাতুনের বড় মেয়ে স্মৃতি খাতুনের বিয়ে দেয়া হয় নরসিংদী জেলায়। গত ২২ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গার চেম্বার ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়। ২৪ অক্টোবর বৌভাত অনুষ্ঠানে নরসিংদী যান কনে স্মৃতি খাতুনের মা, বোন, নানি, দাদা, মামা, ফুপাসহ বেশ কয়েকজন। তারা ওইদিন বৌভাত অনুষ্ঠান শেষে মাইক্রোবাসযোগে চুয়াডাঙ্গায় ফিরছিলেন। ফরিদপুর জেলার মধুখালী আড়পাড়া এলাকায় পেছন থেকে ট্রাকের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যায় মাইক্রোবাসটি। এ সময় ঘটনাস্থলেই মারা যান কনের দাদা

বৃদ্ধ মুন্সি মোশারফ হোসেন (৭০) ও নানি মোমেনা খাতুন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন আলমডাঙ্গা উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের দাউদ মল্লিকের ছেলে কনের ফুপা আসাদুল হক (৩৫), মা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স আছিয়া খাতুন (৫০), ছোট বোন প্রীতি খাতুনসহ (১৬) নিকটাত্মীয় মিনারুল ইসলাম (৪৫), খায়রুল ইসলাম (৪৫) ও আলফাতুন (২৭)। এর মধ্যে আসাদুলের অবস্থা গত রোববার সন্ধ্যায় গুরুতর হয়ে ওঠে। তাকে ঢাকায় নেয়ার সময় রাত ৮টার দিকে মানিকগঞ্জ এলাকায় পৌঁছুলে তিনি মারা যান। গতকাল সোমবার সকালে নিজ গ্রাম আলমডাঙ্গার এনায়েতপুরে তার মরদেহ নেয়া হয়। বেলা ১১টার দিকে দাফন সম্পন্ন হয়। এদিকে কনের মা আছিয়া খাতুন, ছোট বোন প্রীতি খাতুনসহ কয়েকজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গত রোববার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আছিয়া খাতুন অঝোরে কাঁদছেন। কিছুতেই সইতে পারছেন না শোক। তিনি জানান, মানুষ কত খারাপ হতে পারে তা দুর্ঘটনার সময় টের পেলাম। আমরা যখন বাঁচার আকুতি জানিয়ে চিৎকার করছি তখন আমাদের উদ্ধারের নামে কয়েকজন লুটপাট চালায়। তিনি জানান, মাইক্রোবাস থেকে বের করার সময় উদ্ধারকারী একজন তার গলা থেকে সোনার চেন ছিঁড়ে নিয়ে সটকে পড়ে। পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।

 

Comments (0)
Add Comment