স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গার মাটি ও মানুষের মাঝে আজো সমুজ্জ্বল এক সজ্জন ও দানশীল ব্যক্তিত্বের স্মৃতি—হাজী শামসুজ্জোহা বিশ্বাস। ২০১০ সালের এই দিনে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করা এই মহানুভব অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘হাজী শামসুজ্জোহা জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা’-তে এক বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। গতকাল সোমবার বাদ আসর মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে এই মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পরিবার, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
হাজী শামসুজ্জোহা বিশ্বাস কেবল একজন সরকারি কর্মকর্তাই ছিলেন না, বরং তাঁর সাদামাটা জীবনযাপন, সরল বাচনভঙ্গি এবং নিঃস্বার্থ দানশীলতার কারণে চুয়াডাঙ্গাবাসীর কাছে এক বিশেষ শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। শিক্ষা প্রসারে তাঁর সবচেয়ে মহৎ কীর্তি হলো ২০০৩ সালের ৯ মে তাঁর গ্রামের বাড়ি পাঁচকমলাপুরে ‘পাঁচকমলাপুর দারুল উলুম হাফেজিয়া কওমি মাদ্রাসা’ প্রতিষ্ঠা করা, যা বর্তমানে ‘হাজী শামসুজ্জোহা জামি’আ আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা’ নামে পরিচিত।
পিতার ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকীর এই অনুষ্ঠানে মরহুমের পরিবারের পক্ষে স্মৃতিচারণ করেন তাঁর পুত্র, এক সময়ের সাংবাদিক ও বর্তমান প্রবাসী ব্যবসায়ী আরিফুজ্জামান আরিফ। তিনি আবেগময় কণ্ঠে বলেন, “আমার আব্বা ১৫ বছর আগে এই দিনে মারা গেছেন। আপনারা সবাই দোয়া করবেন যেন আল্লাহ তাঁকে জান্নাত দান করেন।” তিনি তাঁর বড় ভাই, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক আলহাজ্ব সাহিদুজ্জামান টরিকের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, আব্বা মারা যাওয়ার পর থেকে বড় ভাই পিতার দায়িত্ব পালন করে গেছেন এবং তাঁদের পরিবারের অভিভাবক হয়ে উঠেছেন। আরিফুজ্জামান আরিফ বিশেষভাবে উল্লেখ করেন, বড় ভাই সাহিদুজ্জামান টরিক পিতার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে চুয়াডাঙ্গার তিন তারকা মানের হোটেল সাহিদ প্যালেস অ্যান্ড কনভেনশন সেন্টার মাদ্রাসার নামে উৎসর্গ করেছেন, যার সম্পূর্ণ আয় মাদ্রাসার কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়। তিনি উপস্থিত সকলের কাছে বড় ভাই এবং ছোট ভাই মো: শরীফুজ্জামান শরীফ (চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ‘দৈনিক সময়ের সমীকরণ’-এর প্রকাশক-সম্পাদক) সহ পরিবারের সকল সদস্য—বোন মুক্তা ও রিক্তা এবং মাদ্রাসা দেখাশোনা করা বোন জামাইয়ের জন্য খাস দিলে দোয়া করার অনুরোধ জানান।
আরিফুজ্জামান আরিফ বলেন, হাজী শামসুজ্জোহা বিশ্বাস আজ স্বশরীরে না থাকলেও, তাঁর প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসার মাধ্যমে হাজারো শিক্ষার্থীর মাঝে তাঁর আলো আজও প্রজ্জ্বলিত। বক্তব্যের শেষে তিনি বিনয়ের সঙ্গে বলেন, “বিশেষ করে আমার আব্বা আম্মা তাঁরা যদি আপনাদের কখনো কষ্ট দিয়ে থাকেন তবে তাঁদের ক্ষমা করে তাঁদের জন্য মন থেকে দোয়া করবেন, যেন আল্লাহ তাঁদের জান্নাত দান করেন।”
দোয়া পরিচালনা করেন, মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মুহতামিম আল্লামা মুফতি আ:কাদের।
দোয়া মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নাজমুল হক স্বপন, দৈনিক খাসখবরের প্রধান সম্পাদক রাজিব হাসান কচি, মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুস্তাফিজুর রহমান শামীম, সুমন পারভেজসহ পাঁচকমলাপুর আলীয়াটনগর গ্রাম বাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষক ছাত্রবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।