পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া গাংনীতে বহুতল ভবন নির্মাণ : ভেঙে পড়ার আশঙ্কা

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনী শহরের ট্রাক টার্মিনালের সামনের একটি বহুতল ভবন নির্মাণে পৌর কর্তৃপক্ষের অনুমতি না থাকায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার সকালে চারতলার ছাদ ঢালাই কাজ চলাকালে তা বন্ধ করা দেয়া হয়। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানান পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম।
পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে পৌরসভার অনুমোদিত নকশা ছাড়াই চারতলা ভবন নির্মাণ করছেন সামসুজ্জাজান ও ওয়াহেদুজ্জামান নামের দুই ভাই। নির্মাণ কাজে অনুমোদিত নকশা অনুসরণ না করে বাড়ির মালিকরা তাদের ইচ্ছেমতো উপকরণ দিয়ে নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্মাণ কাজে প্রয়োজনীয় রড, সিমেন্ট ও বালু দেয়া হয়নি। এছাড়াও পৌরসভার ইমারত নির্মাণ নীতিমালা লঙ্ঘন করায় ভবনের আশেপাশের বাসিন্দাদের নানা প্রকার সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলাম বলেন, ভবন নির্মাণ নিয়ে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বারবার তাদেরকে নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা কর্ণপাত না করে বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। গতকাল চারতলার ছাদ ঢালাই কাজ করার সময় তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। স্থানীয়রা বিষয়টি নিয়ে আপত্তি জানালেও বাড়ির মালিকরা তাদের পাত্তা দেননি। তাই পৌরসভার কাউন্সিলর, প্রকৌশলী ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।
ইমারত নির্মাণ নীতিমালার বিষয়ে পৌর মেয়র বলেন, কেউ বাড়ি নির্মাণ করতে চাইলে পৌরসভায় আবেদন করবেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলী সেই জমি পরিদর্শন ও মাপজোঁক করে সরকারি নীতিমালার আলোকে একটি নকশা তৈরী করে দেন। নকশা অনুযায়ী ভবনের তলা, বেজ থেকে শুরু করে ছাদ পর্যন্ত কোথায় কী পরিমাণ কোন ধরনের রড, সিমেন্ট, ইট, বালু ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। নীতিমালা লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণ করলে সেই ভবন ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাড়ির মালিকরা ভবন নির্মাণ নকশা ও পৌরসভার অনুমতিপত্র দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন উল্লেখ করে মেয়র আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, ভবন মালিকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা ছাড়া পৌর কর্তৃপক্ষের আর তেমন কিছুই করণীয় নেই। তারা নিজ দায়িত্বে বিষয়টির সমাধান না করলে পৌরসভার নীতিমালা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভবন নির্মাণে অনুমতি ও উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নকশা ছাড়াই নির্মাণের পাশাপাশি উপরের দিকে প্রতিবেশীদের জমি দখল করা হচ্ছে। প্রথমতলা তাদের জমিতে থাকলেও তলা বৃদ্ধির সাথে সাথে ছাদের আকার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে ভবনের কিছু অংশ প্রতিবেশীদের জমিতে সম্প্রসারিত হয়েছে।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত ভবন মালিকরা বলেন, নিয়ম মেনে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু অনুমতিপত্র এখন আমরা বাড়িতে খুঁজে পাচ্ছি না।

Comments (0)
Add Comment