প্রথম স্ত্রীর সাথে স্বামী দেখা করায় দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যার চেষ্টা : দগ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন শাপলা খাতুন নামে এক গৃহবধূ। প্রথম স্ত্রীর সাথে দেখা করায় স্বামী আতিয়ারের সাথে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয় দ্বিতীয় স্ত্রী শাপলার। ওই দ্বন্দ্বের জেরে স্বামী আতিয়ারের সামনেই নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে দেন তিনি। আগুনে তার ঘাড়, পিঠ, কোমর ও পায়ের অংশ দগ্ধ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নেয়। গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চুয়াডাঙ্গা শহরতলির দৌলাতদিয়াড়ের ম-লপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ শাপলা খাতুন (২২) সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের আতিয়ার রহমানের দ্বিতীয় স্ত্রী। তারা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের অদূরে ভাড়াবাড়িতে বসবাস করেন।
এদিকে, শাপলা খাতুনের মায়ের অভিযোগ, প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে শাপলাকে বিয়ে করেন আতিয়ার। বিষয়টি জানার পর থেকে সংসারে অশান্তি চলছিলো। সোমবার সকালেও এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিত-ার একপর্যায়ে শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে শাপলা।
পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, গতপরশু রোববার রাতে আতিয়ার রহমান তার প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। বিষয়টি দ্বিতীয় স্ত্রী শাপলা খাতুন জানতে পারলে সোমবার সকালে স্বামীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয়। পরে শাপলা নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
শাপলার মা কহিনুর বেগম জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাতিকাটা গ্রামের কাঠমিস্ত্রি আতিয়ার রহমানের সঙ্গে দুই বছর আগে তার মেয়ে শাপলা খাতুনের বিয়ে হয়। সে সময় প্রথম স্ত্রীর কথা গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন আতিয়ার। কিছুদিন পর শাপলা জানতে পারে, আতিয়ারের আগেও একবার বিয়ে হয়েছে। তার স্ত্রী রয়েছে। তিন ছেলেসহ স্ত্রী হাতিকাটা ঘাটপাড়ায় থাকে।
কহিনুর বলেন, এটা জানতে পেরে আমার মেয়ে ভেঙে পড়ে। তথ্য গোপন করে বিয়ে করায় প্রায়ই আতিয়ারের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। সোমবারও এই বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বাগবিত-া হয়।
স্বামী আতিয়ার রহমান বলেন, পারিবারিক কলহের জেরে সকালে শাপলা রান্নাঘরে গ্যাস সিলিন্ডার থেকে গ্যাস ছেড়ে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থান পুড়ে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তারানা আনোয়ার বলেন, শাপলা খাতুনের শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে। ঘাড়, পিঠ, কোমর ও পায়ের অংশ দগ্ধ হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত নন, পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে খুলনায় রেফার করা হতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, সকালে পারিবারিক কলহের জের ধরে এক গৃহবধূ নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে শুনেছি। এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Comments (0)
Add Comment