স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গা: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি ঘটলো বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই চুয়াডাঙ্গার প্রতিটি মণ্ডপে শুরু হয় দশমীর আনুষ্ঠানিকতা। সিঁদুর খেলা, অঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণের মধ্য দিয়ে দিনটির শুরু হয়, আর বিকেলে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূজার মহোৎসব শেষ হয় এক আবেগঘন পরিবেশে।
দৌলাতদিয়ার মন্দিরে ভিন্ন আঙ্গিকের আয়োজন
শহরতলীর দৌলাতদিয়ার দক্ষিণ পাড়া বারোয়ারী দুর্গা মন্দিরে এবারে ছিল ভিন্ন আঙ্গিকের আয়োজন। বিকেল ৩টায় প্রতিমা মন্দির থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় বিশাল বর্ণিল শোভাযাত্রা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ভক্তরা ঢাক-ঢোলের তালে নেচে-গেয়ে এতে অংশ নেন।
বিশেষ আকর্ষণ ছিল ভক্তদের পোশাক। মন্দিরের পুরুষ সদস্যরা একই রঙের টি-শার্ট এবং মেয়েরা একই রঙের শাড়ি পরে অংশগ্রহণ করায় শোভাযাত্রাটি হয়ে ওঠে আরও প্রাণবন্ত ও দৃষ্টিনন্দন।
শোভাযাত্রাটি বড় বাজার, কবরী রোডসহ শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে দৌলাতদিয়ার ব্রিজ ঘাটে গিয়ে শেষ হয়। সেখানেই সন্ধ্যায় প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে পূজার আনুষ্ঠানিকতার সমাপ্তি ঘটে।
এ বিষয়ে দৌলাতদিয়ার দক্ষিণ পাড়া বারোয়ারী দুর্গা মন্দিরের কোষাধ্যক্ষ অঞ্জন সাহা আবির বলেন, “এবারের পূজা ভিন্ন আঙ্গিকে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভক্তদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও সবার আন্তরিকতায় এই আয়োজন সফল। আমরা বিশ্বাস করি, মা দুর্গার আশীর্বাদে আগামী দিনগুলো শান্তি, ভ্রাতৃত্ব আর সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে।”
১১৩ মণ্ডপে উৎসবমুখর বিসর্জন
দৌলাতদিয়ার মন্দির ছাড়াও চুয়াডাঙ্গা শহরের বড় বাজার, তালতলা, বেলগাছি, দাসপাড়া, দক্ষিণ মাঠপাড়া ও আলুকদিয়া মণ্ডপসহ মোট ১১৩টি পূজামণ্ডপ থেকে বিকেল ৩টা থেকে একে একে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
শোভাযাত্রা ও বিসর্জন ঘিরে গোটা শহরে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। ঢাক-ঢোল, ভক্তদের গান ও নাচে চারপাশ মুখরিত হয়ে ওঠে। নদীর ঘাটগুলোতেও ভিড় জমায় অসংখ্য দর্শনার্থী।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা
বিজয়া দশমীকে ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও স্বেচ্ছাসেবকেরাও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তাদের তৎপরতায় সর্বত্র ছিল শান্তিপূর্ণ ও আনন্দঘন পরিবেশ।
ধর্মীয় নেতারা জানান, দেবী দুর্গার মূল বার্তা হলো— অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভ শক্তির জয়। পূজা শেষে ভক্তরা মায়ের কাছে প্রার্থনা করেন— আগামী দিনগুলো যেন সুখ, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে ভরে ওঠে।