বালকের পায়ে শেকল : বিট পুলিশের হস্তক্ষেপ

চুয়াডাঙ্গার কবিখালী গ্রামে বেপরোয়া চুরিতে অতিষ্ঠ অভিভাবক

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের কবিখালী গ্রামের ১০ বছরের বালক স্বাধীনের বিরুদ্ধে লাগাতার চুরির ঘটনার অত্যাচারে অতিষ্ঠ অভিভাবক তার পায়ে শেকল বেঁধে বাড়িত আটকে রাখে। সংবাদ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার বিট পুলিশ কর্মকর্তা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হস্তক্ষেপে সালিসের মাধ্যমে বালককে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এছাড়া ওই বালকের পরিবারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেছে এলাকাবাসী। সলিসে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে বিচার চেয়ে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গ্রামবাসী।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদরের মোমিনপুরের কবিখালী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মাজেরের ছেলে স্বাধীন (১০)। সে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মোবাইল চুরি, রোগীদের টাকা-পয়সা চুরিসহ চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থান ও নিজ গ্রামে চুরি করে বেড়ায় বলে অভিযোগ রয়েছে। লাগাতার চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত স্বাধীনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পরিবারের লোকজন গত মঙ্গলবার তার পায়ে শেকল বেঁধে তালা লাগিয়ে বাড়িতে আটকে রাখে। ঘটনাটি জানাজানি হলে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জোয়ার্দ্দার, চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের এসআই বিট পুলিশ কর্মকর্তা ভবতোষ কবিখালী গ্রামে উপস্থিত হন। এসময় বালক স্বাধীনের শেকল মুক্ত করে দেয়া হয়। এসময় স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করে জানান, বালক স্বাধীন তার পরিবারের কারণে অল্প বয়সে চুরির ঘটনা ঘটেছে ও এলাকাবাসীকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। এছাড়া স্বাধীনের মা মর্জিনা ও তার দুই মেয়ে আল্পনা এবং রাজিয়ার বেপরোয়া চলাফেরা করে। অপরদিকে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় জহুরা নামে এক মেয়েকে নিজ বাড়িতে এনে রেখেছে, তার চলাফেরাও সন্দেহজনক। তার বাড়িতে বিভিন্ন পর পুরুষের অবাধে চলাফেরা চোখে পড়ার মতো। মাঝে মাঝে বাইরে থেকে নারী এনে দেহ ব্যবসা ও বাড়িতে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে রাত জেগে বিকট শব্দে ডিজে গান ও পিকনিকের আয়োজন হয় ওই বাড়িতে। নিষেধ করলে বিভিন্ন হুমকিধামকি ও মামলার হুমকি দেয় মর্জিনা ও তার দুই মেয়ে। ওই সালিসে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বিচারের দাবি জানাতে থাকে গ্রামবাসী। এলাকাবাসী আরও জানায়, মর্জিনা মহেশপুরের সাজের বাজার এলাকার মেয়ে। গত ২০ বছর আগে রাজ্জাক ওরফে মাজেরের সাথে বিয়ে হয়। মর্জিনা এক সময় ফেনসিডিলের ব্যবসা করতো।
বালকের শেকল মুক্ত করার সময় সালিসে উপস্থিত ছিলেন সানোয়ার মেম্বার, সাবেক মেম্বার আসাদুল, হাকিম, টোটন, মুফা ম-ল, শাহাদত, নুরু ভূঁইয়া, আলম ফকির, পিয়ার আলী, রমজান, মজিবরসহ গ্রাম্য মাতব্বর ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর থানা পুলিশের এসআই পুলিশ কর্মকর্তা ভবতোষ রায় জানান, ছোট শিশু চুরির অপবাদে পায়ে শেকল লাগিয়ে তালা বন্দি করে রাখা হয়েছে সংবাদে ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় তাকে মুক্ত করা হয়। এছাড়া বালক স্বাধীনের মা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে বাইরে থেকে মেয়ে এনে দেহ ব্যবসারসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। সালিসে তারা আর এ ধরনের কাজ করবে না বলে জানালে তাদেরকে সাবধান করে দেয়া হয়।

Comments (0)
Add Comment