বিদ্যুতের লোভোল্টেজ : ব্যাহত হচ্ছে পৌর পানি সরবরাহ

ওজোপাডিকোর কাছে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ভোল্টেজ বাড়ানোর আবেদন করেও পাননি প্রতিকার

স্টাফ রিপোর্টার: বিদ্যুতের ভোল্টেজের অভাবে ভালোভাবে পানি সরবরাহ করতে পারছে না চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। প্রতি মাসে প্রায় ৪ লাখ টাকা বিল দিলেও চাহিদামতো বিদ্যুতের ভোল্টেজ না পেয়ে ওজোপাডিকোয় পত্র দিয়েও মেলেনি প্রতিকার। ফলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বয়ং পৌর মেয়র। তিনি বলেছেন, বিদ্যুতের লো-ভোল্টেজ’র কারণে পাম্পে পানি তো ঠিকমত তুলতেই পারছে না, তারপর দফায় দফায় পুড়ছে পানির পাম্প মোটর। এরপরও তা দ্রুত মেরামত করে চাহিদামতো পানি সরবরাহের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আমরা।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় পানির গ্রাহকের সংখ্যা বর্তমানে ৬ হাজার ৯শ’ ৩২ জন। এর মধ্যে সচল গ্রাহক ৬ হাজার ২শ’ ৫৭। প্রতিদিন এ গ্রাহকের পানির চাহিদা ৭ লাখ লিটার। গ্রাহকদের এ চাহিদা যথাযথভাবে পুরণের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা ৩টি ট্যাঙ্কে ৯টি পাম্প সংযোজন করেছে। পাম্পগুলো সব একসাথে চালানো গেলে পানির চাপ ভালো থাকে। গ্রাহক সাধারণ চাহিদামতো পানি চান। প্রতিবারই গরম মরসুমে বিদ্যুতের সমস্যার কারণে পানি সরবরাহ ব্যাহত হয়। বিগত দিনে বিদ্যুতের লোডশেডিং নামক আসা যাওয়ার কারণে পানি সরবরাহ ব্যাহত হতো, এবারের গরমে লোডশেডিং তেমন না থাকলেও ভোল্টেজ সমস্যা পানি সরবরাহে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাহিদামতো পানি না পাওয়ার কারণে গ্রাহকদের মধ্যে যেমন ক্ষোভ সঞ্চার হচ্ছে, তেমনই বিদ্যুতের ভোল্টেজ যথযথ করার পুনঃপুনঃ তাগিদ দিয়েও সাড়া না পেয়ে পৌর পরিষদ প্রতিকার করতে পারছে না। এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধুরী জিপু বলেছেন, আমরা পানির পাম্প চালানোরমতো বিদ্যুতের ভোল্টেজ পাচ্ছি না। ভোল্টেজ না থাকার কারণে মাসখানেক আগে তিনটি পাম্প বিনষ্ট হয়। পাম্পগুলো দ্রুত মেরামত করেও শুধুমাত্র ভোল্টেজের কারণে পানি সরবরাহ পর্যাপ্ত করতে পারছি না। তবে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। গত ১৪ এপ্রিল ওজোপাডিকো চুয়াডাঙ্গা বিতরণ বিভাগে লিখিতভাবে বিদ্যুতের ভোল্টেজ যথযথভাবে সরবরাহের জন্য জানানো হয়। পরদিন ওজোপাডিকো জানিয়ে দেয়, চুয়াডাঙ্গা জাফরপুর ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপ কেন্দ্র থেকে সঠিকমাপের ভোল্টেজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যুত বিভাগের এহেন জবাব পাওয়ার পর চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের নিকটও বিষয়টি অবগত করে প্রতিকার প্রার্থনা করা হয়েছে।
একেতো পানির ফোর্স তথা চাপ নেই, তারপর দিনের তিনবারেই পানি আসার প্রথম দিকে পানিতে থাকে ময়লা। কিছু এলাকার পানি দুর্গন্ধও। এর কারণ কি? এ প্রশ্নের জবাবে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র বলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার পানি সরবরাহ লাইগুলো দীর্ঘদিনের। আমরা তথা বর্তমান পৌর পরিষদ দায়িত্বভার গ্রহণের পর বেশকিছু সমস্যা পেয়েছি। এর মধ্যে পানি সমস্যা একটি। ১৯৮৫ সালে স্থাপিত পানির লাইনে আইরন জমার কারণে পাইপ সুরু হয়ে যাওয়ার বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করি। ১০ কোটি টাকার প্রকল্প দেয়। তা দিয়ে পানির পাইপ পুন স্থাপন, ওভারহেড ট্যাঙ্ক ও ৪টি পাম্প পরিবর্তন করার কাজ চলছে। যেসব এলাকায় কাজ সম্পন্ন হয়েছে, সেসব এলাকায় পানির চাপ ভালো হয়েছে। প্রকল্পভুক্ত কাজ সম্পন্ন হলে সকল এলাকায় পানির চাপ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি। তবে তা পরিপূর্ণ করতে হলে দরকার মানসম্পন্ন বিদ্যুতের নিশ্চয়তা।
প্রসঙ্গত: চুয়াডাঙ্গা পৌরসরবরাহকৃত পানির গ্রাহকদের পানির লাইনে মিটার স্থাপনের কাজ চলছে। ২ কোটি ৯৩ লাখ ৫১ হাজার ১৩ টাকা ব্যায়ে মিটার সংযুক্তির কাজ অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনও ওই মিটার দেখে গ্রহাকদের বিল করার কাজ শুরু হয়নি। মিটার সংযুক্তকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর নতুন গ্রাহকদের নিজ খরচায় মিটার কিনে সংযুক্ত করতে হবে।

Comments (0)
Add Comment