বিয়ের ১০দিনের মাথায় লাশ হলেন কিশোরী

স্টাফ রিপোর্টার: বিয়ের ১০দিনের মাথায় নব্যবিবাহিত অন্তরা খাতুন নামে এক কিশোরী অত্মহত্যা করেছে। গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার নুরনগর কলোনিপাড়ার নিজবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। আত্মহত্যাকে ঘিরে এলাকায় ব্যাপক রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি বিয়ের ১০দিনের মাথায় আত্মহত্যার বিষয়টি খোদ পুলিশও মানতে নারাজ। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।
এদিকে এই আত্মহত্যার পেছনে মেয়ের বাবার শক্ত কোনো অভিযোগ না থাকলেও এলাকাবাসী ও স্বজনেরা অন্তরার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও তার স্বামীকেই মূল কারণ হিসেবে দুষছেন। নিহত অন্তরা খাতুন চুয়াডাঙ্গা আল-হেলাল জুনিয়র ইসলামী একাডেমি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো।
স্থানীয়রা জানায়, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার নুরনগর কলোনিপাড়ার কলিম উদ্দিন কলোর মেয়ে অন্তরা খাতুনের সাথে একই এলাকার আশার ছেলে নিটল মটরসে কর্মরত শাহ আলমের (২৫) দীর্ঘদিন যাবত প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত ২২ মে শাহ আলমের বাড়িতে দুজন একই ঘরে অবস্থানকালে এলাকার লোকজন আপত্তিকর অবস্থায় তাদেরকে আটক করে। পরে এলাকাবাসী সেদিনই কাজী ডেকে ৯০ হাজার টাকা দেনমোহরে তাদের বিয়ে দেয়।
নিহত অন্তরার বাবা বলেন, বিয়ের দুদিন পর শ্বশুরবাড়ি থেকে মেয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে। তাদের বিয়েটা শাহ আলমের পরিবারের লোকজন মেনে নিতে পারেনি। এজন্য তারা অন্তরা খাতুনকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। তালাক দেয়ার জন্য উঠেপড়ে লেগেছিলো। তাদের দেয়া চাপ আমার মেয়ে সহ্য করতে না পেরে ঘরের সিলিংফ্যানে গলাই দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
এদিকে, খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ অন্তরা খাতুনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে দুপুরে মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর শেফালী খাতুন বলেন, ছেলের পরিবার অন্তরাকে মেনে নেইনি। এই অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে। এছাড়াও অন্তরার ওপর কোন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি আবু জিহাদ খান জানান, বিয়ের ১০দিনের মাথায় অন্তরা খাতুনের আত্মহত্যার বিষয়টি আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। সে কারণে লাশ ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। সেই সাথে আমরা রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছি। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে পেলে সবকিছু বোঝা যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এদিকে গতকাল রাত সাড়ে নয়টার দিকে জানাজার নামাজ শেষে স্থানীয় কবরস্থানে অন্তরা খাতুনের মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা হয়।

Comments (0)
Add Comment