ভেঙে ফেলা হচ্ছে চুয়াডাঙ্গার এতিহ্যবাহী পান্না সিনেমাহল : তৈরি হবে সিনেপ্লেক্স

স্টাফ রিপোর্টার: ভেঙে ফেলা হচ্ছে চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী পান্না সিনেমাহল। সম্প্রতি হলটি ভেঙে ফেলার কাজে হাত দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার হল থেকে মেশিনপত্র ও সার্ভার খুলে নেবে জাজ মাল্টিমিডিয়া। পূর্বে যেটি রূপছায়া সিনেমাহল নামে পরিচিত ছিলো। জেলার ১৪টি সিনেমাহলের মধ্যে চালু থাকা শেষ তিনটি সিনেমাহলের মধ্যে অন্যতম ছিলো সিনেমা হলটি। স্থানীয়রা জানান, সিনেমাহলের পরিবেশ, রুচিসম্মত ছবির অভাব, আকাশ সংস্কৃতির দাপট আর ঘরে ঘরে টেলিভিশন চলে আসায় এ ব্যবসায় ধস নেমে গেছে অনেক আগেই। অথচ এক সময় এ সিনেমাহলটিই ছিলো সীমান্তবর্তী এ জেলার মানুষের আনন্দ-বিনোদনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। সেইসঙ্গে সিনেমা হলটিতে কর্মসংস্থান ছিলো এ এলাকার বহু মানুষের। ম্যানেজার থেকে শুরু করে টিকেট কাউন্টার মাস্টার, রিল মাস্টার, প্রচারম্যান, গেইটম্যান ইত্যাদি বিভিন্ন পদে চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন অনেকেই। কিন্তু বর্তমানে তারা বেকার বললেই চলে। সর্বশেষ সিনেমাহল ব্যবসার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে মহামারী করোনাভাইরাস।
এ প্রসঙ্গে পান্না সিনেমাহলের কর্ণধার দিলীপ কুমার আগারওয়ালা বলেন, ‘পান্না সিনেমাহল ভেঙে সেখানে মাল্টিকমপ্লেক্স ও সিনেপ্লেক্স তৈরি করা হবে। এজন্যই পুরান হলটি ভেঙে ফেলতে হচ্ছে।’
হলটির ব্যবস্থাপক আব্দুর রশিদ হীরা বলেন, ১৯৫০ সালে দর্গা দাশ আগরওয়ালার হাত ধরে চুয়াডাঙ্গায় প্রথম ‘রূপছায়া’ সিনেমাহল নির্মিত হয়। কালের আবর্তে ব্যবসায়ীক ধারা আর উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানা পরিবর্তন হয়ে ‘পান্না’ সিনেমাহল হিসেবে নামকরণ করা হয়। যুগের সঙ্গে তালমিলিয়ে আরও আধুনিকায়ন করতেই সিনেমাহলটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। এখানে মাল্টিকমপ্লেক্স ও সিনেপ্লেক্স গড়ে তোলা হবে।
প্রসঙ্গত. চুয়াডাঙ্গা জেলাতে মোট সিনেমাহলের সংখ্যা ছিলো ১৪টি। এরমধ্যে মাত্র তিনটি সিনেমাহল খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছিলো। বাকি ১১টি সিনেমাহল বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই। নামকাওয়াস্তে চালু থাকা সিনেমাহলগুলো হচ্ছে- চুয়াডাঙ্গা শহরের পান্না সিনেমা (রূপছায়া) ও নান্টুরাজ সিনেমা এবং আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের টকিজ সিনেমা।
বন্ধ হয়ে গেছে, আলমডাঙ্গার শিলা সিনেমা, জনি সিনেমা, মুন্সিগঞ্জের রকি, সরোজগঞ্জের মিতালি, হাটবোয়ালিয়ার শিল্পী, দামুড়হুদার ছবিঘর, কার্পাসডাঙ্গার মিন্টুরাজ, জীবননগর উপজেলার আধুনিক ও মহানগর এবং দর্শনার দর্শন ও হীরা সিনেমাহল। এসব সিনেমা হলের মালিকরা সিনেমাহল ভেঙে মাদরাসা, গোডাউন, ক্লিনিক, ছাত্রাবাস, কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও মার্কেট তৈরি করেছেন।

Comments (0)
Add Comment