মুরগি ও গরু নিয়ে বিপাকে খামার মালিকরা

মেহেরপুরে তীব্র গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে লোডশেডিং

মাজেদুল হক মানিক: মেহেরপুর জেলায় প্রচ- গরম আর লোডশেডিংয়ের তীব্রতায় অচল হতে বসেছে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো। একইসাথে প্রাণিসম্পদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারিরা। তপ্ত পরিবেশে প্রাণ সংকটে রয়েছে খামারের মুরগি আর কোরবানি উপযুক্ত গরু। তীব্র গরম আর লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন এবং খরায় পুড়ছে মাঠের ফসল। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্নভাবে আল্লাহর কাছে বৃষ্টির ফরিয়াদ করছে মানুষ। পশু পালন, মুরগির খামার আর ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান মেহেরপুর জেলার মানুষের আর্থিক উন্নয়নের অন্যতম মাধ্যম। গেল ১০ দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়া গ্রীষ্মের তাপদাহ আর্থিক উন্নয়নের মাধ্যমগুলোতে দিয়েছে বড় ধরনের ধাক্কা। সেই ধাক্কার পালে হাওয়া দিয়ে বেড়েই চলেছে লোডশেডিং। ২৪ ঘণ্টায় লোডশেডিং হচ্ছে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত। তীব্র গরমে প্রাণিসম্পদ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন গবাদিপশু ও মুরগির খামার মালিকরা। বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি হচ্ছে কোরবানি উপযুক্ত গরুর পরিচর্যায়। একই সাথে খামারের মুরগি পালনে পড়েছে নানা সংকটে। একদিকে তীব্র তাপদাহ অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের ফলে গরু ও মুরগির টিকে থাকার চ্যালেঞ্জ শুরু হয়েছে খামারগুলোতে। গরমে টিকিয়ে রাখতে খামারগুলোতে নিয়মিত ব্যবহার করতে হয় বৈদ্যুতিক পাখা। প্রাণিসম্পদ খামারের পাশাপাশি ছোট বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানে উৎপাদন নেমে এসেছে প্রায় শূন্যতে। এতে শিল্প প্রতিষ্ঠান মালিকদের পাশাপাশি শ্রমিকরা রয়েছেন বিপাকে।  জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় এবার কোরবানি উপযুক্ত পশু রয়েছে এক লাখ ৯০ হাজার ৫২০টি। মেহেরপুর জেলায় কোরবানির চাহিদা ৯০১১২টি এবং উদ্বৃত্ত এক লাখ ৪০৮টি পশু বিক্রি হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে রাজধানীর কোরবানির পশু হাটে বিক্রির জন্য অনেক খামারি গরু পালন করে থাকেন। খামারিরা জানান, স্বাভাবিক গরমেই খামারে বৈদ্যুতিক ফ্যান দিতে হয়। গরু মোটাতাজা করণ প্রক্রিয়ায় তাপমাত্র সহনীয় পর্যায় রাখা একটি অত্যবশ্যকীয় কাজ। এই গরমে গরুর প্রয়োজনে ফ্যান চালানো জরুরি। তবে ব্যাপকভাবে লোডশেডিং হওয়ায় তা চরমভাবে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। অসহনীয় গরমে খাদ্য গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে অনেক গরু। তাই কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে গরু পালনকারীদের। এদিকে প্রচ- দাবদাহে ক্ষেতের ফসল পুড়লেও বিদ্যুতের অভাবে সেচ দিতে পারছে না অনেক কৃষক। আবার বাড়িতে অবস্থান করেও স্বস্তি নেই। একটু প্রশান্তির আশায় গাছের ছায়ায় অবস্থান নিয়ে হাতপাখা ঘুরিয়ে স্বস্তি খুজছেন অনেকে। পাশাপাশি বৃষ্টি চেয়ে নানাভাবে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। লোডশেডিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুত সমিতির এজিএম (ই অ্যান্ড সি) নাজনীন নাহার জেরিন বলেন, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় সরবরাহের বড় ফারাক রয়েছে। চাহিদার অর্ধেকের কম বিদ্যুত পাওয়া যাচ্ছে। তাই সাব স্টেশনের ফিডার ভিত্তিক পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং করে চাহিদা আর সরবাহের সমন্বয় করা হচ্ছে। জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসার পাশাপাশি প্রাণিসম্পদ রক্ষায় দ্রুততম সময়ে বিদ্যুতের দুর্দশা আর দাবদাহ থেকে মুক্তি মিলবে এমন আশায় করছেন সকলে।

Comments (0)
Add Comment