যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে তিন বন্দি পালিয়েছে

যশোর প্রতিনিধি: যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের (বালক) তিন বন্দি পালিয়েছে। শনিবার রাতে বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রের বন্দিদের বিক্ষোভ ভাঙচুরের ঘটনার মধ্যে তারা পালিয়েছে। এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, বিভিন্ন দাবিতে শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কেন্দ্রের ভেতর বিক্ষোভ ও ভাঙচুর শুরু করে। এরপর জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে রাত ১টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনার মধ্যে তিন বন্দি পালিয়ে গেছে। এদের মধ্যে একজনের বাড়ি নাটোর জেলায়। বাকি দুজনের ঠিকানা মনে নেই। আমি বাইরে আছি। তিনি আরও বলেন, তিন বন্দি পালানোর ঘটনায় রোববার সকালে কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি।
এদিকে শনিবার রাতে জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খান বলেন, ১৫০ জনের ধারণ ক্ষমতার কেন্দ্রটিতে ২৫০ জন বন্দি রয়েছে। বেশ কিছু দাবিতে তাদের অসন্তোষ রয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন্দিরা বিক্ষোভ শুরু করে। এক পর্যায়ে তারা কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার সেখান যান। আমি নিজেও গিয়েছিলাম। তাদের কথা শুনেছি। সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছি। তিন ঘণ্টা পর বিক্ষুব্ধ বন্দিদের শান্ত করা সম্ভব হয়েছে। সেখানে ভাঙচুর হলেও কেউ আহত হয়নি। তিনি আরও বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী মো. সায়েমুজ্জামান বলেন, করোনাকালে কেন্দ্রের বন্দিদের বাইরে বের হতে দেয়া হয় না। এজন্য তাদের ক্ষোভ আছে। খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ আছে।
এছাড়াও সুপেয় পানির সমস্যা আছে। এমন বেশ কয়েকটি দাবিতে বন্দিরা বিক্ষোভ করেছে। আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, বেশ কিছুদিন ধরে কেন্দ্রে প্রত্যেক বন্দিদের জন্য দৈনিক ৭২ টাকা করে খাদ্যের বরাদ্দ দাবি তুলে আসছিল। তাছাড়া কেন্দ্রেটিতে আলাদা আলাদা রুমে সিনিয়র-জুনিয়র ভেদে খাদ্য সরবরাহ ও সুযোগ সুবিধার দাবি তুলেছিল। সেই দাবিতে শনিবার রাতে বন্দিদের মধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়। পরে কেন্দ্রের আনসার সদস্যরা বিক্ষোভ বন্ধে অভিযান চালান। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে যশোর জেলা পুলিশের শতাধিক সদস্য অভিযান চালান। পরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে তিন বন্দি কিশোরের হত্যা ও ১৫ জনের আহত হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছিল। একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে কেন্দ্রে বারবার এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

Comments (0)
Add Comment