রিমান্ড শেষে আদিয়ানমার্টের সিইওসহ চারজনের আদালতে সোপর্দ

প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের পৃথক একটি মামলা দায়ের 
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের মামলায় গ্রেফতার হওয়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিকসহ চারজনের আবারও জমিন আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক মানিক দাস গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিন দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে তোলা হয়।
এদিকে, গতকাল একই আদালতে আদিয়ানমার্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের পৃথক একটি মামলা দায়ের করেছেন মুজিবুল ইসলাম নামে এক গ্রাহক।
চুয়াডাঙ্গা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক কেএম জাহাঙ্গীর কবীর জানান, গত ২৯ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আদিয়ান মার্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক, তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরদিন ৩০ অক্টোবর আদালতে সোপর্দ করা হলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক মানিক দাস তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওইদিনই আদালতে গ্রেফতারকৃতদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন ওই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোপাল চন্দ্র ম-ল।
তিনি আরও জানান, গত ২ নভেম্বর ছিলো রিমান্ড আবেদন শুনানি। ওইদিন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া মামলার আরেক আসামি সিইও জুবায়েরের বাবা আবু বক্কর সিদ্দিককে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেয়া হয়। গত সোমবার তাদের রিমান্ড শেষ হয়। গতকাল মঙ্গলবার আবারও গ্রেফতারকৃতদের জামিন আবেদন করে তাদের আইনজীবী। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম প্রথম আদালতের বিচারক মানিক দাস জামিন আবেদন নাকচ করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিবাদী পক্ষের আইনজীবী বদর উদ্দিন জানান, আমার মক্কেলদের জামিনের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করা হবে। আশা করি সেখান থেকে জামিন মিলবে।
প্রসঙ্গত, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি গ্রামের মৃত ওহিদুল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান উজ্জলের কাছ থেকে ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৪৮০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় আদিয়ান মার্ট। এই অভিযোগে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জুবায়ের সিদ্দিকী মানিক, তার বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামের নাম উল্লেখ করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন উজ্জল। আসামি করা হয় অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে। ওই মামলার প্রেক্ষিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা সদরের মোমিনপুর গ্রামে আদিয়ান মার্টের প্রধান কার্যালয় ঘিরে রাখা হয়। রাতে সিইও জুবায়েরকে খুলনা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয় জুবায়েরের বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক, ভাই কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ সিদ্দিক ওরফে রতন এবং ম্যানেজার মিনারুল ইসলামকে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৭ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে আদিয়ান মার্টের বিরুদ্ধে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১ হাজার ৮০০-এর মতো এনভয়েস অর্ডার বাকি আছে। ভোক্তা অধিকারে রয়েছে ৩২২টি অভিযোগ।

 

Comments (0)
Add Comment