স্টাফ রিপোর্টার:চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে কালেক্টর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দেয়ালে শহীদ ওসমান হাদির স্মরণে প্রথম গ্রাফিতি অঙ্কন কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার ২৪ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী এ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়। শিল্প ও প্রতিবাদের এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে এলাকাজুড়ে সৃষ্টি হয় ভিন্ন এক আবহ, যেখানে রঙ ও রেখায় ফুটে ওঠে শহীদ হাদির সংগ্রাম, সাহস ও আত্মত্যাগের ইতিহাস।
গ্রাফিতি অঙ্কন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন মেসবাউর রহমান, ওমেয়ার হাসান, শাহরিয়ার রাফিন, শান্তনু ইসলাম, সাফিন, অর্ণক বিশ্বাসসহ আরও কয়েকজন তরুণ শিল্পী ও স্বেচ্ছাসেবক। তাঁদের সৃজনশীল প্রচেষ্টায় দেয়ালে স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে শহীদ ওসমান হাদির প্রতিচ্ছবি ও তাঁর প্রতিবাদী চেতনার গল্প, যা পথচারীসহ সাধারণ মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শহীদ ওসমান হাদি এভাবেই আমাদের মাঝে অমর হয়ে থাকবেন—প্রতিরোধের চেতনায়, স্মৃতির গভীরতায় এবং আগামী প্রজন্মের অনুপ্রেরণায়। আধিপত্যবাদ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর আপসহীন সংগ্রামকে দৃঢ় প্রত্যয়ে অব্যাহত রাখার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়। আয়োজকেরা বলেন, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন প্রজন্ম যেন অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়, সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
তাঁরা আরও জানান, এই গ্রাফিতি শুধু একটি শিল্পকর্ম নয়; এটি অন্যায়, অবিচার ও দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক শক্তিশালী প্রতীক। একই সঙ্গে এটি শহীদ হাদির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রকাশ, যা দীর্ঘদিন মানুষকে তাঁর আদর্শ ও সংগ্রামের কথা স্মরণ করিয়ে দেবে।
গ্রাফিতি অঙ্কন চলাকালীন সময়ে এলাকার শিক্ষার্থী, অভিভাবক, পথচারীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে ভিড় করেন। অনেকেই দাঁড়িয়ে থেকে পুরো কাজটি প্রত্যক্ষ করেন এবং শিল্পীদের উৎসাহ প্রদান করেন। কাজ শেষে সাধারণ মানুষ গ্রাফিতিটির ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁদের মতে, এমন উদ্যোগ চুয়াডাঙ্গা শহরের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি করেছে, তেমনি ইতিহাস ও প্রতিবাদের বার্তাও মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি গ্রাফিতি তরুণদের ইতিহাস জানার পাশাপাশি দেশপ্রেম ও মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করবে। ভবিষ্যতে এ ধরনের আরও উদ্যোগ নেওয়ার জন্য তাঁরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।