শৈলকুপায় শিক্ষার্থীকে হত্যার পর গাড়িচাপা বলে প্রচার মামলা নিচ্ছে না পুলিশ : প্রতিবাদে সহপাঠীদের মানববন্ধন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী বন্যা খাতুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর গাড়িচাপায় মৃত্যুর প্রচার চালানো হচ্ছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা নিচ্ছে না পুলিশ। মামলা গ্রহণ নিয়ে শৈলকুপা ও হাইওয়ে থানা পুলিশের মধ্যে রশি টানাটানি চলছে। এ ঘটনার তদন্ত ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তার সহপাঠীরা। বন্যা খাতুন ছিলেন ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের কম্পিউটার বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তিনি সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের একমাত্র মেয়ে। চার বছর আগে বিয়ে হয় শৈলকুপা উপজেলার পদমদি গ্রামের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী জিবলুর বড় ছেলে সোহানের সঙ্গে। বাবা জাহাঙ্গীর হোসেন অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে বন্যাকে হত্যার পর লাশ সড়কের গাড়ির নিচে ফেলে পিষ্ট করা হয়েছে। এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রভাবশালী একটি চক্র বিষয়টি সড়ক দুর্ঘটনা হিসাবে চালিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের চাচাতো ভাই বিপ্লব হোসেন।
পুলিশ বলছে, গত রোববার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বন্যা তার শ্বশুরবাড়ি থেকে ঝিনাইদহ শহরের উদ্দেশে রওনা হন। তবে তিনি কার সঙ্গে মোটরসাইকেলে ছিলেন, সে বিষয়টি এখনও অজানা। পথে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া মহাসড়কের শৈলকুপা উপজেলার কানাপুকুরিয়া এলাকায় একটি ট্রাকের চাপায় ঘটনাস্থলেই বন্যার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এদিকে বন্যার মৃত্যুর ঘটনা দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে বিচারের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের পাশে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন তার সহপাঠীরা। তারা বলেন, বন্যার মৃত্যু নিছক দুর্ঘটনা নয়, এটি পরিকল্পিত হত্যা। তারা দাবি জানান, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
মানববন্ধনে বন্যার মা, চাচি, ভাই-বোনসহ স্বজনরা অংশ নেন। তারা জানান, বন্যা দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। এমনকি তার কাছে যৌতুকও দাবি করা হয়েছিল। তারা অভিযোগ করেন, এসব নির্যাতনেরই পরিণতি এই পরিকল্পিত হত্যা।
শৈলকুপা থানার ওসি মো. মাসুম খান জানিয়েছেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া মামলা গ্রহণ করার আইনে কোনো বিধান নেই। অপরদিকে হাইওয়ে থানা ঝিনাইদহের ওসি মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেছেন, হত্যা মামলা গ্রহণের এখতিয়ার তাদের নেই।