সরকারি চাকরির আশ্বাসে অনশন ভাঙলেন শাহীন আলম

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে চাকরির আশ্বাস পেয়ে অনশন ভেঙেছেন ঝিনাইদহের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শাহীন আলম। সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা পানি পান করিয়ে তার অনশন ভাঙান। এর আগে সকাল ৯টা থেকে ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে আমরণ অনশনে বসেছিলেন শাহীন আলম। একটি চাকরির নিশ্চয়তা না দেয়া পর্যন্ত এক ফোটা পানিও পান করবেন না বলে জানিয়েছিলেন তিনি। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শহীদ মিনারের পাশে কার্টন বিছিয়ে বসে আছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শাহিন আলম। পেছনে টাঙানো একটি ব্যানার। সেখানে লেখা ছিল ‘প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকধারী একজন তীব্রমাত্রার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তির কর্মসংস্থানের দাবিতে আমরণ অনশন’। নিচে তার নাম লেখা। মাইক্রোফোন হাতে চাকরির আবেদন জানাচ্ছিলেন শাহীন আলম। দাবি করছিলেন, তিনি বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করছেন কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় চাকরি পাচ্ছেন না। যোগ্যতা অনুযায়ী তিনি একটি চাকরি চান। শাহীন আলম ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আজমপুর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে। ২০১৫ সালে এইচএসসি পাসের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ভর্তি হন। ২০১৯ সালে অনার্স শেষ করেন। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সের ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন শাহীন আলম। নিজ উদ্যোগে ভারত, বাংলাদেশের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।
ঝিনাইদহ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদটি প্রকাশের পর আমাদের নজরে আসে। পরে শাহীন আলমকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়। কিন্তু তখন তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙবেন না। পরে রাত ৯টার দিকে আমি গেলে আমাকেও সরকারি চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত অনশন ভাঙবেন না বলে জানিয়ে দেন। পরে জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে রাতে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেন তিনি।
শাহিন আলম বলেন, আমাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যেতে বলা হলে আমি তাদের স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিই একটি চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত আমার এ অনশন চলবে। পরে জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম আশ্বাস দেন চাকরির ব্যবস্থা করে দেবেন। এজন্য আমরণ অনশন আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। চাকরি না পেলে আবারও অনশনে বসবেন বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে জেলা প্রশাসক মনিরা বেগমের মোবাইলে ফোন দিলে বন্ধ পাওয়া যায়।

Comments (0)
Add Comment