সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রেশমার লাশ নেহালপুরে দাফন

মায়ের বাড়ি ফেরার অপেক্ষায় শিশু আলিফ

স্টাফ রিপোর্টার: কালীগঞ্জ-যশোর সড়কের বারোবাজার নামকস্থানে বাস-দুর্ঘটনায় নিহত শারমিন আক্তার রেশমার লাশ স্বামীর বাড়ি চুয়াডাঙ্গার নেহালপুর গ্রামে দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। কোলের ৪ বছরের শিশু আলিফ এখনও জানে না তার মা মারা গেছে। শুধু এতোটুকু জানে পরীক্ষা শেষ হলে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরবে। ডিঙ্গেদহ বাজারপাড়ার চা দোকানি আব্দুর রশিদের পরিবারে একের পর দুর্ঘটনায় শোকের পাল্লা ভারী হয়েই চলেছে। এদিকে রেশমার কলেজের শিক্ষকেরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার আগে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে আসেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ বাজারপাড়ার আব্দুর রশিদের মেয়ে শারমিন আক্তার রেশমার পারিবারিক ভাগে পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় বেগমপুর ইউনিয়নের নেহালপুর গ্রামের মানিকের সাথে। বিয়ের এক বছরের মাথায় তাদের কোলজুড়ে আসে ছেলে আলিফ (৪)। স্বামী সুশিক্ষিত হওয়ায় স্ত্রীকেও লেখাপড়া চালিয়ে যেতে উৎসাহ জোগায়। তাই রেশমা যশোর এমএম কলেজে ম্যানেজমেন্ট মাস্টার্সে ভর্তি হয়। বুধবার দ্বিতীয় পরীক্ষা দিয়ে বাসযোগে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কালীগঞ্জ-যশোর সড়কের বারোবাজার নামকস্থানে বাস-দুর্ঘটনায় নিহত হয় রেশমাসহ ১১জন। বুধবারই রাতে রেশমার লাশ স্বামীর বাড়ি নেহালপুর গ্রামে পৌঁছুলে রাত সাড়ে ১০টার দিকে নামাজে জানাজা শেষে গ্রাম্যকবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিার সন্ধ্যার আগে যশোর এমএম কলেজের শিক্ষকেরা রেশমাদের বাড়িতে আসেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, আব্দুর রশিদের এক ছেলে এক মেয়ে। কিছুদিন আগে ছেলে শামীম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় গুরুত্বর আহত হয়ে বাড়িতে চিকিৎসাধীন আছে। ঠিকমত স্মৃতিশক্তি ফিরে আসেনি। সে শোক কাটতে না কাটতেই একমাত্র মেয়ের লাশ বাবার কাঁদে। এক দিকে সন্তান অসুস্থ অন্যদিকে মেয়ের মৃত্যু। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা। রেশমার মা বলেন, মেয়ে পরীক্ষার হল থেকে বের হয়ে ফোনে কথা বলে। আমি বাড়ি ফিরছি মা। আলিফ কেমন আছে। কি করছে। কারণ রেশমা পরীক্ষা দিতে গেলে ছেলে আলিফকে তার নানা বাড়ি ডিঙ্গেদহে রেখে যেতো। বুধবারও একই সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নাগদহের শুভর সাথে বাসে তুলে দেন বাবা রশিদ। চা বিক্রি করে সংসার চালানো এবং ছেলের চিকিৎসা করাতেই হিমশিম খেতে হয় আব্দুর রশিদকে। তার ওপর এতো সব!

Comments (0)
Add Comment