হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত চুয়াডাঙ্গার কৃষককূল

শামীম রেজা: প্রচ- শীত আর হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে সবাই দল বেঁধে বোর ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন চুয়াডাঙ্গার কৃষকেরা। মাঠের পর মাঠ শুধু বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত। কৃষকেরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ধানের জমি তৈরিতে। জমি পরিষ্কার, পানি দেয়া, কাদা করা, জমি সমান করা, জমির আইল টানাসহ জমি তৈরির যাবতীয় কাজ করছেন। আবার কেউ বা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন এবং চারা রোপণেরও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
জানা গেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার চারটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কৃষকেরা বোরো ধানের চারা রোপণের জন্য জমি তৈরি করার কাজ করছেন। সত্যি কথা বলতে কি একেবারে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন কৃষকেরা জমি তৈরির কাজে। সেই ভোর থেকে শুরু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত জমি তৈরি, পানি দেয়া, বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করে; সেই চারা আবার জমিতে রোপণ করা এসব নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে বোর ধানের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষি বিভাগ। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গা চারটি উপজেলায় এ বছরে বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮শ হেক্টর। চুয়াডাঙ্গা জেলায় এ বছর ১ হাজার ৮শ ৬ হেক্টর বোরো ধানের বীজতলায় চারা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গা চার উপজেলার ১৯ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। গত বছর বোর মরসুমে চুয়াডাঙ্গা জেলার বোর ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৪ হাজার ৩শ ৯৭ হেক্টর। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৬ হাজার ৮শ ২০ হেক্টর, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১২ হাজার ৫ শ ২৭ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৭ হাজার ৯শ ৫০ হেক্টর এবং জীবননগর উপজেলায় ৭ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে। এ বছর বোর ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৮শ হেক্টর। চুয়াডাঙ্গা কৃষি বিভাগের ধারণা গত বছরের তুলনায় এবছরের বোর ধানের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া সম্ভব হবে বলে আশা করছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার চিতলা ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদের সাথে কথা হয় তিনি বলেন, আমি এ বছর বোরো ধানের আবাদ করার জন্য আমার জমি ইতিমধ্যে তৈরি করেছি। দুই-একদিনের মধ্যেই আমি বোর ধান লাগাবো। গতবারে তুলনায় এ বছরে ধানের একটু খরচ বেশি হবে। কারণ সার এবং জনের দাম অনেক বেশি। একইভাবে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জুড়ানপুর ইউনিয়নের দলিয়ারপুর গ্রামের সাহাদুলের সাথে কথা হয় তিনি বলেন, গতবার আমার দুই বিঘা বোরো ধান ছিল। তাতে খরচ বাদে আমার ভালোই হয়েছে। এ বছর বোর ধানে একটু খরচ বেশি হবে। এক বিঘা বোরো ধানের জমি তৈরি থেকে শুরু করে তারা রোপন,সার, সেচ সহ ধান কাটা পর্যন্ত খরচ হয় ১৪ থেকে ১৬ হাজার টাকা। যদি জমি বর্গা নিয়ে আবাদ করাতে হয় তাহলে আরো বেশি খরচ হবে। এরপর যদি ধানের পরিপূর্ণ দাম না পাওয়া যায় তাহলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।