২ দিন দেশের বিভিন্নস্থানে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস : করোনার মাঝে বৃষ্টিতে স্বস্তিতে শিশুরা

আনোয়ার হোসেন: আকাশের এক টুকরা কালমেঘ দেখে হৃদয়ে উল্লাস জাগে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। বৃষ্টির জলধারার আবেদন তাই চিরন্তন। সজল বর্ষায় একদিকে যেমন প্রাণ পায় প্রকৃতি তেমনই বৃষ্টিবিলাসে মাতে সবাই। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে প্রায় সবাই এখন বাড়ির ভেতরে। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। তিন মাসেরও অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ শিশুদের খেলাধুলা। খাঁ খাঁ করছে মাঠ। দেশে করোনা প্রভাব অনেটাই বেশি প্রকট। গত কয়েকদিন ধরে ভ্যাপসা গরমের সাথে বৃষ্টি হচ্ছে। তারপরও কাটেনি গরম। গতকালও চুয়াডাঙ্গাসহ দেশে বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ১৫৩ মিলিমিটার রেকর্ড করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় যশোরে ৩৪ দশমিক শূণ্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো নিকলিতে ২৩ দশমিক শূণ্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩১ দশমিক ৬ ডিগ্রি এবং সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিলো ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ মিলিমিটার। আর এই বৃষ্টিতে শহর কিংবা গ্রাম সব এলাকার শিশুরাও মেতে উঠেছে খেলায়। কিছু সময়ের জন্য হলেও তাদের মাঝে ফিরে আসে স্বস্তি। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে শিশুরা চার দেয়ালের মাঝে সময় কাটাচ্ছে। করোনার প্রভাবে বন্ধ থাকা খেলার মাঠের সবুজ ঘাস আরও সবুজ ও বড় হয়ে উঠেছে। আর শিশুরা চার দেয়ালের মাঝে উঠেছে হাঁপিয়ে। এ পরিস্থিতিতে অস্থির হয়ে উঠছে শিশুরা। একটু বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাবা-মার প্রতি নানা বায়না করছে তারা। কিন্তু নানান কথায় ভুলিয়ে শিশুকে নিয়ে ঘরের মধ্যেই কখনো ক্রিকেট, কখনো বা ফুটবল খেলছেন তারা।
এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, হিমালয়ের পাদদেশীয়, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় বিরাজ করছে। একারণে আগামী ২ দিন দেশের বিভিন্নস্থানে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাস জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
এক বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারী ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে। বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ/দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। যা অস্থায়ীভাবে ২৫-৩০ কি. মি. বেগে ঝড়োবাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
নদীবন্দর সমূহের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, ময়মনসিংহ, সিলেট, টাঙ্গাইল, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলসমূহের ওপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর (পুনঃ) ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Comments (0)
Add Comment