মধ্যরাতে রিকশায় চড়ে হাসপাতালে ৩ করোনারোগী

ইমরান হোসাইন: রাত ১২টা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটের দিকে যাচ্ছে দুইটি রিকশা। তাতে রয়েছেন দুই নারীসহ তিন যাত্রী। সাথে ব্যাগ ব্যাগেজ। নামলেন আইসোলেশন ইউনিটের সামনে। উপস্থিত কয়েকজন কৌতুহলবশত জানতে চাইলেন তাদের পরিচয়। এতরাতে আইসোলেশনের সামনে আসার কারণ? তাদের পরিচয় জানার সাথে সাথেই কৌতুহলি লোকজন যেনো এক লাফ দিয়ে পিছিয়ে গেলেন। সকলেই নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে তাদের সাথে কথা বলেন। তখনই বোঝা গেলো ওই রিকশার তিন যাত্রী অন্য কেউ নন, তারা সকলেই করোনা ভাইরাস আক্রান্ত। শুক্রবার পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী জেলায় আক্রান্ত ১৪ জনের মধ্যে তারা তিনজনও রয়েছেন। তাদের বাড়ি শহরের বড়বাজারপাড়ায়।

উপস্থিত কয়েকজন নিরাপদ দূরত্বে থেকে ওই তিনজনের সাথে কথা বলেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার পরও তারা কেনো রিকশায় চড়ে এলেন? ওই দুই রিকশা চালকের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা কেনো ভাবলেন না? অবশ্য তাদের মধ্যে একজন বলেছেন, হাসপাতালে আসার জন্য আমাদের একের পর এক ফোন করা হচ্ছে। ডাক্তার ফোন দিলে তো আসতেই হবে। এতোরাতে আসার জন্য রিকশা ছাড়া আর কি পাবো?

কথা হয় রিকশা চালক চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে লিয়াকত ও দীননাথপুর গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে নূরনবীর সাথে। নিজেদের নিরাপত্তার জন্য কোনো কিছু না থাকা সত্বেও কেনো করোনা আক্রান্ত রোগী নিয়ে হাসপাতালে এলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেছেন, চুয়াডাঙ্গা বড়বাজার এলাকার শিশুস্বর্গের পাশ থেকে দুই নারী ও এক পুরুষ হাসপাতালে আসার কথা বলে। তাদের কাছে ব্যাগ পোটলা ছিলো। ভেবেছি হয়তো অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন। ভর্তি হওয়ার জন্য ব্যাগ পোটলা নিয়েছেন। তাদের করোনা রয়েছে এটা আমাদের বলেনি। আমরা কিভাবে বুঝবো?

করোনা আক্রান্ত রোগী আনা নেয়ার জন্য নির্ধারিত অ্যাম্বুলেন্স থাকা সত্বেও তিনজন রোগী রিকশায় চড়ে হাসপাতালে এলেন। চুয়াডাঙ্গায় করোনা ভয়াবহ রূপ নেয়া সত্বেও কেনো এ ধরণের অসচেতনতা? দুই রিকশাচালকের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকছে কিনা এসব জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. শামীম কবির মোবাইলফোনে বলেছেন, ওই তিন রোগী এত রাতে আইসোলেশনে এসে ভর্তি হয়েছেন এটাই বড় সংবাদ। রিকশাওয়ালাদের কোনো সমস্যা হবে না বলেও জানান তিনি।

Comments (0)
Add Comment